বাজার মুল্য ৬’শ কোটি টাকা : নাটোরে ৮০ হাজার গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে

নাজমুল হাসান, নাটোর: কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে নাটোরে প্রায় ৬’শ কোটি টাকার গরু পালন করা হয়েছে। এসব গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও রাজধানী সহ দেশের স্থানে চলছে কেনা বেচা। এবার দেশী গরুর বাজার চাঙ্গা থাকায় অধিক লাভের আশা করছেন খামারিরা। তবে কোনভাবেই যেন অবৈধ পথে গরু আসতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। নাটোর প্রাণিসম্পদ বিভাগ সুত্র জানায়, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে ঝুঁকেছেন সদর ও গুরুদাসপুরসহ নাটোরের বেশীরভাগ উপজেলায় খামারীরা। এখানকার সাড়ে ৫ হাজার খামারে গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। কোরবানীর পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে এখানকার খামারীরা বেছে নিয়েছেন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। গমের ভুসি, চাউলের খুদ, খড়, কাঁচা ঘাস সহ বিভিন্ন খাবার দেওয়া হচ্ছে উন্নত জাতের গরুগুলোকে। উপযুক্ত পরিচর্যার কারণে এসব গরু মোটা ও স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠছে।
নাটোর সদর উপজেলার ডাল সড়কের খামারি রেকাত উদ্দিন বলেন, কোরবানীর ঈদকে টার্গেট করেই বিভিন্ন হাট ঘুরে ১০১টি উন্নত জাতের গরু যেমন শাহীওয়াল, রাজস্থানী, হারিয়ানা, উলুবাড়িয়া, নেপালী, দেশী শংকর জাতের গরু কিনেছেন। তারপর সাত থেকে আট মাস পরিচর্যা করেছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করায় এখানকার গরুর চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে এখানকার খামার থেকে। প্রতিবছরের মতো এবারো তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
একই এলাকার খামারি রেকাত উদ্দিন বলেন, গরু মোটাতাজা করতে কোন রাসায়নিক বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেন না। গরুগুলোকে সাধারণত কাঁচা ঘাস, খড়, খৈল. গমের ভূষি, চালের খুদ খাওয়ানো হয়। এ পদ্ধতিতে গরু লালন পালন করলে অল্পদিনেই গরু হৃষ্টপুষ্ট হয় বিক্রির উপযুক্ত হলে ভাল দাম পাওয়া যায়।
গুরুদাসপুর উপজেলার কালাকান্দর গ্রামের খামারী ওমর শেখ বলেন, গরু পালন লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে দিন দিন গরুর খামার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে কোরবানির আগে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা গরুর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হন দেশীয় খামারীরা। এজন্য সীমান্ত পথে অবৈধ গরু আসা বন্ধের দাবি জানান তিনি।
একই উপজেলার চাঁচকৈড় গাড়িষাপাড়ার খামারি আজাদ উদ্দিন বলেন, তার খামারে বর্তমানে ৫০টি গরু আছে। পুঁজির অভাবে তিনি খামারটি বড় করতে পারছেন না। সহজ শর্তে ঋণ পেলে তিনি খামার বড় করা সহ অধিক লাভ করতে পারতেন।
নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ বেলাল হোসেন বলন, পশু মোতাজাতায় অবৈধপন্থা ঠেকাতে তাদেও নজরদারী অব্যাহত আছে। এ বছর কোরবানির জন্য নাটোরে প্রায় ৮০ হাজার গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। যার বাজার মূল্য ছয়’শ কোটি টাকা। ইতিমেধ্যই বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ভাল দাম পাওয়ায় গরুর খামারিরাও লাভবান হচ্ছেন।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।