কলমাকান্দায় বাবার ছবি হাতে ফেরার অপেক্ষায় তিন শিশু

স্টাফ রির্পোটার: সাত বছরের শিশু ত্রাণফি তার বাবার ছবি হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছে। কখন তার বাবা বাড়িতে ফিরে আসবে। মা ডেকে কোলে নিবেন। বাবা মারা গেছেন বাড়ির লোকজন বুঝানোর চেষ্টা করলেও ত্রাণফি কিছুতেই তা মানতে রাজি না। সে বার বার বলছে আজ রোববার তার বাবা বাড়িতে আসবে। স্বামীর লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন স্ত্রী কাজলী ঘাগ্রা (৩৮), আর বাবার লাশের অপেক্ষায় ছেলে প্রীতম ঘাগ্রা (১৯), প্রতীক ঘাগ্রা (১৫) ও প্রতীম ঘাগ্রা (১২)।

গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে চট্রগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার কদমরসুল ইউনিয়নের ছোটকুমিরা এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্লান্টে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। এ দুর্ঘটনায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের ছোট মনগড়া গ্রামের রতন নকরেক (৪৫) নিহত হন। তার বাবার নাম ক্ষিতিশ রংদী।
বোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, বাড়িতে কিছু আত্মীয়স্বজন বসে আছেন। কেউ কাঁদছেন, কেউ সান্ত্বনা দিচ্ছেন। তখনো রতনের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছেনি। স্বামী হারানোর শোকে স্ত্রী কাজলী ঘাগ্রার আহাজারিতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহতের বোন প্রীতিলতা নকরেক বলেন, গত ২৫ বছর ধরে রতন এই অক্সিজেন প্লান্টে শ্রমিকের কাজ করছিল। গত সপ্তাহে সে চাকুরী ছেড়ে দিয়েছিল। পাঁচদিন পর আবারও সে ওই অক্সিজেন প্লান্টেই চাকুরি নেন। এই চাকুরেই যেন তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রতন ছাড়া তার পবিবারে আর কেউ উপর্জন করেন না। সে শ্রমিকের কাজ করে যা পায় তাই দিয়ে পরিবারের সংসারসহ সন্তানদের লেখাপাড়ার খরচ চলে। সে মারা যাওয়ায় তার সন্তানদের লেখাপড়া অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। তার বড় ছেলে প্রীতম এবার এইচএসসি পাশ করেছে, প্রতীক এসএসসি পরীক্ষার্থী, প্রতীম সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মেয়ে ত্রাণফি ২য় শ্রেণিতে পড়ে।
নেত্রকোণার কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। দুর্ঘটনায় নিহত রতনের মরদেহ এখনো এলাকায় পৌছেনি।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।