রাস্তায় ফেলে যাওয়া বৃদ্ধার দায়িত্ব নিলেন নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক

স্টাফ রির্পোটার: তিন সপ্তাহ ধরে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধা পরে আছে নেত্রকোণা সদরের কালিয়ারা গাবরাগাতী ইউনিয়নের গলুহা গ্রামের রাস্তায়। কোথায় থেকে এসেছেন তা কেউ জানেনা। কথাও বলতে পারেন না ঠিকমতো। প্রতিবেশি এক নারী তার বাড়িতে আশ্রয় দিলেও স্থানীয়দের নানান কথাবার্তায় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখবর শুনে, পরিবারে অবহেলার শিকার বয়সেরভাবে ভারাক্রান্ত, ক্ষুধার্ত, দুর্বল সত্তোরোর্ধ ওই মহিলাকে রাস্তা থেকে তোলে এনে চিকিৎসা সহ সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

অগ্রাণের শেষভাগের শীতে শরীর কাঁপছিল। উৎকট গন্ধে কাছে যাওয়া যাচ্ছিল না। ছেঁড়া কাথায় মোড়ানো বৃদ্ধা পরে ছিলেন সড়কের পাশে। এমন সংবাদ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধারের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলী আমজাদকে নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে শুক্রবার সন্ধায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন,‘ মাঠ প্রশাসনে কাজের সূত্রে অনেক অসহায় মানুষের পাশে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ স্যার সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতী ইউনিয়নের গলুহা এলাকায় রাস্তার পড়ে থাকা এই বৃদ্ধার কথা জানান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। দুর্গন্ধের কারণে কেউ ওই বৃদ্ধা মহিলার কাছে যেতে চাচ্ছে না। এমনকি কোন যানবাহনও তাকে নিতে চাচ্ছে না। আমাদের আরএমপি শ্রমিক তাকে পরিষ্কার করে নিয়ে এসেছেন। এরপর তার শারিরীক অবস্থা দেখে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার না সুফিয়া বেগম বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্ত নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারেননি।

কালিয়ারা গাবরাগাতী ইউনিয়নের গলুহা গ্রামের বাসিন্দা সাদিহ আহমেদ খান বলেন,‘ তিন সপ্তাহ ধরে রাস্তায় পাশে পড়ে ছিলেন। কে বা কারা রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। আমরা ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে আমদের বাড়ির বারান্দায় রেখিছিলাম। স্থানীয় লোকজনের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে আমরা সাংবাদিক ও প্রশাসনকে জানাই। এরপর প্রশাসন তাকে উদ্ধার করে নিয়েছে। চিকিৎসা করাচ্ছে।’
নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা একরামুল হাসান বলেন, ওই বৃদ্ধা শারিরীক অবস্থা বেশ খারাপ। উনার চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অজ্ঞাতনামা বৃদ্ধাকে পর্যবেক্ষণপূর্বক আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর চিন্তা করেছিলাম। মনে হল তিনি খুব দুর্বল, পরিবারের অবহেলার শিকার বয়সেরভাবে ভারাক্রান্ত, ক্ষুধার্ত এবং দুর্বল। তাই তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে পুলিশ ও সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পরিচয় উদঘাটনের জন্য বলা হয়েছে। আমাদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নতুন কাপড় ও কম্বল প্রদান করা হয়। সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য একজনকে ঠিক করা হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।