
সৌমিন খেলন : দাফতরিক কাজের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে ঠেকানোসহ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে ফিরিয়ে আনছেন তারা। পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সমাধানেও ঘড়ির কাঁটায় সময় না মেপে রাত-বিরেতে মাঠে-ঘাটে ছুটছেন মানুষের কল্যাণে। ভালো কাজের জন্য নিজেরা প্রশংসিত হয়ে নিজ দফতরের ভাবমূর্তিও করে চলছেন উজ্জ্বল।
তারা হলেন- নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নমিতা দে এবং বারহাট্টা উপজেলার ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন। স্বীকৃতিস্বরূপ বিভাগীয় পর্যায়ে তারা সেরা ইউএনও’র পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন একাধিকবার। ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে পূর্বধলায় ইউএনও হিসেবে কাজ শুরু করেন নমিতা। অপরদিকে ২০১৭ সালের ১৭ মে বারহাট্টায় যোগদান করেন ইউএনও ফরিদা। এরপর থেকেই সুনামের সঙ্গে নিজ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মানবিক কাজের মাধ্যমে অল্পসময়ে সাধারণ মানুষের আস্থা ও অফুরন্ত ভালোবাসা অর্জন করেছেন। নিজ দফতরের দায়িত্বপালনের সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছেন বছরজুড়ে। ছুটে গেছেন গরিব-দুঃখী মানুষের কাছে। কনকনে শীতে রাতের আঁধারেও বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, হাসপাতাল আর ফুটপাত চষে বেড়িয়েছেন। শীতার্ত ও বস্ত্রহীনদের শরীরে বস্ত্র আর অনাহারীর মুখে আহার তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও প্রত্যন্ত গ্রাম ঘুরে ভিটেমাটি ও গৃহহীনদের খুঁজে বের করেছেন। প্রকৃত অসহায়দের জমি ও ঘর দিয়ে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য করে চলছেন বাস্তবায়ন। বাল্যবিয়ে আটকে দিয়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের দেখিয়েছেন আলোর পথ। সেই সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা এমনকি হাত খরচ উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যক্তি কাঁধে তুলে নিয়েছেন তারা। শুধু তাই নয় বয়স্ক ও বিধবা ভাতা নিয়েও রাখছেন কঠোর নজরদারি।
ইউএনও ফরিদা ও নমিতা বলেন, স্বামী-সন্তান থেকে শুরু করে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সর্বচ্চো ত্যাগ আর সাপোর্ট রয়েছে। এরই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে রয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও সুদৃষ্টি। যার কারণে নিজ দায়িত্ব সামলেও মানবিক ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়েছে। যখন যেখান ইভটিজিং ও বাল্যবিয়ের খবর পেয়েছেন তা রোধ করতে ছুটে গেছেন ওই দুই ইউএনও। কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বাল্যবিয়ে রোধ করেছেন জানিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, বাল্যবিয়ে রোধ করেই দায়িত্ব শেষ করেননি বরং ওইসব মেয়েদের পড়ালেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি আর্থিক সহায়তারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। নারী তথা সব মানুষের কল্যাণে এভাবেই কাজ করে যেতে চান আলোচিত এ দুই নির্বাহী কর্মকর্তা।