বারহাট্টায় স্কুলছাত্রী হত্যা: ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারী আটক

বিশেষ প্রতিনিধি : নেত্রকোণার বারহাট্টায় স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মণকে (১৫) কুপিয়ে হত্যার পতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বুধবার দুপুরে বারহাট্টা উপজেলা সদরে স্টেশন রোডে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ বারহাট্টা কেন্দ্র, ইয়ুথ গ্রুপ, কমিউনিটি ফোরাম ও এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বুধবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ হত্যাকারী কাউসার মিয়াকে(১৮) আটক করেছে। আটকের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ।

পুুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ জানান, হত্যাকান্ডের পর থেকে পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারী বখাটে কাইসার মিয়াকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি ধানক্ষেতে হত্যাকারী কাউসার পালিয়ে ছিল। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশ তাকে আটক করে।

এ দিকে স্কুলছাত্রী মুক্তি রানী বর্মন হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বারহাট্টা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে নারী প্রগতি সংঘ বারহাট্টা কেন্দ্র, ইয়ূথ গ্রুপ, কমিউনিটি ফোরাম ও সর্ব স্তরের নাগরিক সমাজের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী এই কর্মসূচির পালন করা হয়। এ সময় বক্তারা অভিযুক্ত কাওসারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।


বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ বারহাট্টা কেন্দ্রের কেন্দ্র ব্যবস্থাপক সুরজিৎ ভৌমিকের পরিচালনায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন- বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঈনুল হক কাসেম, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠা জেলা সংসদের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক অসিত কুমার ঘোষ, নেত্রকোনা জেলা রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সদস্য নারায়ণ কর্মকার, মহিলা পরিষদ বারহাট্টা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নিলুফার সুলতানা, উদীচী উপজেলা শাখার সভাপতি কান্তি রঞ্জন চন্দ চৌধুরী, কবি মনোয়ার সুলতান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন, কংস থিয়েটারের সহ সভাপতি মোখলেছুর রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি পরেশ চন্দ্র পাল, বারহাট্টার গোপালপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আসম উল্লাহ, নারী প্রগতি সংঘের নেত্রকোণা কেন্দ্র ব্যবস্থাপক মৃণাল কান্তি চক্রবর্তী, স্বাবলম্বী উন্নয়ন সিমিতির অধিকার ও সুশাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক কোহিনুর বেগম, ইয়ূথ গ্রুপের সভাপতি ধৃতি সরকার, নিহত মুক্তির বাবা নিখিল চন্দ্র বর্মণ, বড় বোন রিপা রানী বর্মণ, দীপা রানী বর্মণ, মামা শ্রীকান্ত চন্দ্র বর্মণ প্রমুখ।


নেত্রকোণা ডিবি পুলিশ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে বারহাট্টার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের একটি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা ঘাতক কাউসার মিয়াকে বাড়ির পাশে গ্রামের ধান ক্ষেত থেকে আটক করে। এ ব্যাপারে বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ লিখিত বকএব্য জানান, কাউসার স্কুল ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মনকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে প্রায়শই অত্যক্ত করত। এ ব্যাপারে বিচার দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তি রানীকে কুপিয়ে হত্যা করে বখাটে কাউসার। অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পবাড়ির পাশ থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় বারহাট্টা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আটককৃত কাউসার ডিবি পুলিশের হেফাজতে আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা এলাকায় দশম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মনকে কুপিয়ে আহত করে একই গ্রামের কৃষক সামছরু রহমানের ছেলে বখাটে কাওসার মিয়া (১৮)। বিকেল পাঁচটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎস মুক্তি রানীকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত মুক্তি রানী বর্মন বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মণের মেয়ে এবং প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।