
বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণার হাওরসহ নিম্নাঞ্চলে বোরো ধান কাটা প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি, কলমাকান্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৪৯ শতাংশ খেতের বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে হাওড়ের শত ভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে বলে জানায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে গত তিন দিন ধরে খালিয়াজুরীসহ হাওড়াঞ্চলে মাইকিং করা হচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে টানা ১১ দিন ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসময়ে কালবৈশাখি ঝড় ও শিলাবৃষ্টি সহ ভারি বৃষ্টিপাতে হাওড়াঞ্চলে আগাম বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই হাওড়ে ৮০ ভাগ পাকা ধান কেটে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, খালিয়াজুরী উপজেলার হাওড়ে ১৮ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলার প্রায় ৫৩ জমির ধান কাটা হয়েছে। আরো ৩০ ভাগ জমিতে পাকা ধান রয়েছে। মাত্র ১৫ ভাগ দান এখনো কাচা রয়েছে। ২৩ এপ্রিলের মধ্যে পাকা ধান কাটা না হলে পাকা ফসল ঝুঁকিতে পড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৯ শতাংশ খেতের বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। আমা করা যাচ্ছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এরমধ্যে হাওরে ৪০ হাজার ৯৭৪ হেক্টর জমি রয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এসব খেতের পাকা ধান কাটতে শুরু করেন কৃষকরা। এবার এখন পযন্ত হাওরে পানি না আসায় কৃষকরা স্বস্তিতে ধান কাটছেন। শ্রমিকদের পাশাপাশি সাত শতাধিক কম্বাইন্ড মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা হচ্ছে। গতকাল সোমবার পযন্ত হাওরাঞ্চলের অর্ধেক জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। যে ভাবে ধান কাটা হচ্ছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে আশা করছেন স্থানীয়রা। এ দিকে, এখন বৃষ্টি বা বন্যার তেমন কোন পূর্বাভাসও নেই বলে জানায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, ‘বাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও শতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোন বন্যা পরিস্থিতির কোন সম্ভবনা নেই। কৃষকরা যাতে নির্বিঘ্নে ফসল কেটে ঘরে তোলতে পারে সেজন্য আমরা ছুটি বাতিল করে সর্বক্ষণ মাঠে রয়েছি।