
বিশেষ প্রতিনিধি: জেলার হাওড়াঞ্চল খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার কয়েকটি এলাকায় রবিবার বিকেলে ভারি শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় হয়েছে। এতে আগাম জাতের বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
জানা গেছে, বিকাল ৩টার দিকে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় শুরু হয়। প্রায় ছয় মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে খালিয়াজুরী সদর, কৃষ্ণপুর ও মেন্দিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার বোরো ফসলের ক্ষতি হয়। মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের শিপন মিয়া জানান, ঝড়ে উলুকান্দা হাওড়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ওই হাওড়ে আমার এক একর জমির ধান প্রায় পেকে এসেছিল। চার-পাঁচদিনের মধ্যে কাটা পড়তো। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ধানের খুব ক্ষতি হয়ে গেছে।’ একই হাওড়ের কৃষক শফিকুল ইসলাম এবং আম্বর আলীও তাদের জমির উঠতি ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। এদিকে খালিয়াজুরী সদরের গৌড়ার হাওড় এবং কীর্তনখোলা হাওড়েও আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
খালিয়াজুরীর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন এলাকায় ফোন করে খবর নিচ্ছি। তবে কতটুকু ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নই।’
এদিকে ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে জেলার মদন উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রবিবার বিকেল ৩টার দিকে ৩০ মিনিটের স্থায়ী শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধান,বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করার জন্য কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠ পর্যায় কাজ করছেন।
ওই উপজেলার কুলিয়াটি গ্রামের কৃষক আলতু মিয়া ও পলাশ মিয়া বলেন,‘ ব্রি ২৮ ধান চিটা হয়ে গেছে। যা কিছু ধান ছিল তাও শিলা বৃষ্টিতে ঝরে গেছে। কাঁচা ধানও শিলা বৃষ্টিতে ঝরে গেছে। বছরের শুরুতে যে অবস্থা ফসল ঘরে তোলার কোন উপায় নাই। সংসার চালানো তো দূরের কথা, সারা বছর ছেলে-মেয়ে খাবে কি তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’
মদন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম জানান, ‘আমার ইউনিয়নের বাজিতপুর, উচিতপুর, কুলিয়াটিসহ কয়েকটি গ্রামের হাওরে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে টিনের ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে। বিশেষ করে বোরো ধান, পাঠ ও আম এর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠাই মুসকিল হয়ে পড়বে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান,‘শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার মদন ও গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা হচ্ছে।