নেত্রকোণায় রেজাউল করিম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে চাঞ্চল্যকর রেজাউল করিম রাজীব (২২) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। মাদক কারবারে সহযোগিতা না করার জেরেই তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিশ্চিত হয়েছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে পিবিআই নেত্রকোণা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির, পরিদর্শক অভিরঞ্জন দেব, পুরিদর্শক জাকির হোসেন প্রমুখ। পিবিআইয়ের দাবি, এই হত্যা কাণ্ডে আটজন জড়িত রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর করিব জানান, গত বছরের ৭ মে মোহনগঞ্জের ভাটিয়া গ্রামের শেখ ইসলামের পুকুর থেকে রেজাউল করিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রেজাউল ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। তার বাড়ি একই উপজেলার দেওথান গ্রামে।

ঘটনার দুই দিন পর নিহতের বাবা বাচ্চু মিয়া মোহনগঞ্জ থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার আসামিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করা হলেও কেউ হত্যার দায় স্বীকার করেননি। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।
তদন্তে পিবিআই নিশ্চিত হয়, মোহনগঞ্জের হাটনাইয়া গ্রামের ইয়াবা কারবারি মিজানুর রহমান, মো. মাহবুব ও আবুল হোসেন এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। তারা রেজাউলের মোটরসাইকেলে এলাকায় ইয়াবা আনা-নেয়া করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় মাদক কারবারিরা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হন। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী রেজাউলকে মেরে ফেলার জন্য একই গ্রামের যুবক দেলোয়ার হোসেনকে (২৮) নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই টাকার বিনিময়ে দেলোয়ারসহ মিজানুর রহমান, মো. মাহবুব, আবুল হোসেন, একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন, যতন মিয়া, কলমাকান্দার শুক্কুর আলী ও ময়মনসিংহের তারাকান্দার নলদীঘি গ্রামের সিরাজুল মিয়া হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।

পুলিশ কর্মকর্তা শাহীনুর কবির জানান, হত্যাকারীরা প্রথমে রেজাউলকে ভাটিয়া গ্রামের শেখ ইসলামের পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। পরে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে সিমেন্টের জমাটবাঁধা পাথরের সঙ্গে বেঁধে মরদেহটি পুকুরে ফেলে দেয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক জাকির হোসেন বলেন, ‘ওই পুকুরের পাহারাদার যতন মিয়াকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করে আদালত হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং হত্যায় জড়িতদের নাম বলেন। তার দেয়া তথ্যে গত সোমবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে দেলোয়ার হোসেন ও পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে হাটনাইয়া গ্রাম থেকে মাহবুবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারাও মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।’

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।