
বিশেষ প্রতিনিধি: সম্প্রতি বন্যায় নেত্রকোণা জেলার প্রায় ২শো কোটির টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে সড়ক বিভাগ সহ ফসল রক্ষা বাঁধেরও। জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের একটি ‘জীবন রক্ষা’ বাঁধের অন্তত পনেরোটি স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় আসন্ন বোরো মৌসুমের ফসল নিয়ে আশংকায় রয়েছে তিন উপজেলার অন্তত ৭ ইউনিয়নের ৪০ টি গ্রামের কয়েক লাখ চাষি। তাদের দাবী, দ্রুত ‘জীবন রক্ষা’ বাঁধটি সংস্কার করে আগাম বন্যার হাত থেকে বোরে ফসল রক্ষার।
স্থানীয়রা জানায়, জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সাত কিলোমিটার ‘জীবন রক্ষা’ সম্প্রতি বন্যায় ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। বাঁধটির কারণে নেত্রকোণা সদর, বারহাট্টা ও কলমাকান্দা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের কয়েক লাখ চাষির বোরো ফসল রক্ষা করে। এজন্যই ওই বাঁেধল নাম দেয়া হয় জীবন রক্ষা বাঁধ।রায়পুর ইউনিয়নের নওয়াপাড়া-বনুয়াপাড়া-রাজাপুর-দুধকোড়া মৌজার ৭ কিলোমিটার অংশের অন্তত ১৫ টি স্থানে ক্ষতি হয় বাঁধের। বন্যায় বালু পরে নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি। প্রায় ২ দশক আগে বাঁধটি তৈরি হলেও সর্বশেষ ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখার অধীনে বাঁধটি সংস্কার করা হয়। আসন্ন বোরো মৌসুমের আগেই বাঁধটি সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বারহাট্টা উপজেলার চল্লিশ কাহনীয়া গ্রামের আজমান ফকির, আব্দুল হাই, আঙ্গুর মিয়া ও সঞ্জয় সাহা বলেন, জীবনরক্ষা বাঁধটির জন্য অন্তত চল্লিশটি গ্রামের মানুষের বোরো ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পেত। গত বন্যায় বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন আর ফসল ঘরে তোলা যাবে না। জরুরি ভিত্তিতে জীবনরক্ষা বাঁধটি সংস্কারের দাবী জানান তারা।
রায়পুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নওয়াপাড়া- বনুয়াপাড়া-রাজাপুর-দুধকোড়া পর্যন্ত বাঁধটি শুধু ফসল রক্ষা করে না। অন্তত ১০ টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। ফসল আনা নেওয়া করা হয়। বনুয়াপাড়া গ্রামে একটি স্কুল একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এখন সব বন্ধ হয়ে গেছে।’
বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু বলেন, বাঁধটি প্রথমে ২০০৭ সালে এলাকাবাসী স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে তৈরি করে। পরে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন শাখার অধীনে ২০১২ সালে সাত কিলোমিটার জীবন রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ৩ উপজেলার অন্তত ৪০ টি গ্রামের বোরো ফসল হুমকীতে পরবে। বাঁধটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় ইউএনও, জেলা প্রশাসক ও জনপ্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ে বাঁধটি করে এলাকার মানুষের ফসল রক্ষা করার ব্যবস্থা করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, সিডিএমপি প্রকল্পের আওতায় এই বাঁধটি করা হয়েছিল। বন্যার ক্ষতি হওয়া রাস্থাঘাটের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প বরাদ্দ হলে বাঁধের কাজ করা হবে।