কলমাকান্দায় ‘ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস’ পালিত

স্টাফ রির্পোটার: নানা কর্সূচির মধ্য দিয়ে নেত্রকোণার কলমাকান্দায় শহীদ সাত মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে ‘ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস’ পালিত হয়েছে। সোমবার সকালে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যৌথ উদ্যোগে করোনা মহামারির কারণে সীমিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালন করা হয়।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় নাজিরপুর স্মৃতিসৌধ ও সীমান্তবর্তী ফুলবাড়ি এলাকায় সাত শহীদের সমাধিতে গার্ড অব অনার এবং পুস্পস্তপক অর্পণ করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মানু মজুমদার।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী, কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত রায়, দুর্গাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শারমীন সুলতানা নেলী, কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল আমীন, কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস, উপজেলা যুগলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক পলাশ বিশ্বাস প্রমুখ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সকালে দুর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে কলমাকান্দায় পাকহানাদার ক্যাম্পে পাকিস্তানিদের যাবার খবর পান মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী কমান্ডার নাজমুল হক তারার নেতৃত্বে টাইগার কোম্পানির ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে নাজিরপুর বাজারের সব কয়টি প্রবেশ পথে অ্যাম্বুস করেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর পাকবাহিনী না আসায় তাঁদের অ্যাম্বুস প্রত্যাহার করে নিজ ক্যাম্পের যাওয়ার পথে নাজিরপুর কাচারির কাছে পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিতে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি করতে থাকলে এক পর্যায়ে সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, নেত্রকোণার আবদুল আজিজ ও মো. ফজলুল হক, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মো. ইয়ার মামুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন। নাজিরপুরের অদূরে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন লেংগুরা এলাকায় ফুলবাড়িতে ১১৭২ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে সমাহিত করা হয়। নেত্রকোণাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবছর দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে সীমিত করা হয়।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।