কলমাকান্দায় ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধদিবস পালিত

বিশেষ প্রতিনিধি : নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নেত্রকোণার কলমাকান্দায় নাজিরপুর যুদ্ধদিবস পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও উপজেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে সাড়ে ১০টার দিকে নাজিরপুর স্মৃতিসৌধে ও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লেংগুরা সাত শহীদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় নেত্রকোণা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য মানু মজুমদার, সংরক্ষিত নারী আসসের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান শেফালী, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার রায়, নেত্রকোনা পৌর সভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান জুয়েল, কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মো. নুরুল আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে বাদজোহর লেংগুরা জামে মসজিদে ও একই সময়ে স্থানীয় মন্দির-গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুপুরে বন্যা দুর্গত ১০টি অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণসহ বন্যা দুর্গত ২০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সকালে দুর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে কলমাকান্দায় পাকহানাদার ক্যাম্পে পাকিস্তানিদের যাবার খবর পান মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী কমান্ডার নাজমুল হক তারার নেতৃত্বে টাইগার কোম্পানির ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে নাজিরপুর বাজারের সব কয়টি প্রবেশ পথে অ্যাম্বুস করেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর পাকবাহিনী না আসায় তাঁদের অ্যাম্বুস প্রত্যাহার করে নিজ ক্যাম্পের যাওয়ার পথে নাজিরপুর কাচারির কাছে পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিতে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি করতে থাকলে একপর্যায়ে সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, নেত্রকোণার আবদুল আজিজ ও মো. ফজলুল হক, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মো. ইয়ার মামুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন।
নাজিরপুরের অদূরে ভারত সীমান্তসংলগ্ন লেংগুরা এলাকায় ফুলবাড়িতে ১১৭২ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে তাঁদের সমাহিত করা হয়। নেত্রকোণাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবছর দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।

 

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।