আটপাড়ায় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ,সদরে ধর্ষণ মামলায় যুবক গ্রেপ্তার

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১৪) গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এ দিকে, সদর উপজেলায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় সাইকুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবককে গতকাল শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটপাড়ার লুনেশ^র ইউনিয়নের ওই স্কুল ছাত্রীকে প্রতিবেশী যুবক মামুন মিয়া (২৩) সম্প্রতি প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেয়েটি তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর থেকে মামুন মেয়েটিকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করতে থাকেন। গত শুক্রবার ভোরে মেয়েটি টয়লেট থেকে ফেরার পর মামুন পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা তাঁর দুই সহযোগী নিয়ে মেয়েটিকে জোড় করে তুলে নেওয়া হয়। এরপর গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে গ্রামের কয়েকজন মাতবর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চালায়। কিন্তু মেয়েটির বাবা এতে রাজি না হয়ে ওই দিন রাতে বিষয়টি মুঠোফোনে নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সীকে জানান। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। গতকাল শনিবার সকালে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামুনসহ তার দুই সহযোগী জুয়েল মিয়া (২২) ও জলিল মিয়ার (২৫) নাম উল্লেখ করে গণধর্ষণের মামলা করেন। মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে। তাই এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর ইকবাল বলেন, মামলায় উল্লেখিত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করতে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’

এ দিকে, সদর উপজেলা মেদনী ইউনিয়নের একটি গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে (২২) গণধর্ষণ মামলায় আসামি সাইকুল ইসলামে গতকাল শনিবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী নয়ন মিয়া (২৩), সাইকুল ইসলাম (২৪) ও আবদুল হাই (৩২) ওই গৃহবধূকে বাড়িতে একা পেয়ে উত্যক্তসহ আপত্তিকর কথা বলতেন। গত ২৪ মে রাতে ওই গৃহবধূ ঘর থেকে বের হলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা ওই তিন যুবক মুখে গামছা বেঁধে জোড় করে তুলে নিয়ে যান। পরে সাইকুল ইসলাম ও আবদুল হাই তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পরদিন ওই নারী নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর গত ২৬ জুন ওই তিন যুবকের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ২৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নেত্রকোণা মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। পুলিশ গতকাল শনিবার আসামি সাইকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাখের আহম্মেদ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রবাসির স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলায় সাইকুল নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। আর পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। কারণ ২৫ তারিখ এ রকম বিষয় নিয়ে কেউ থানায় আসেননি।’

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।