স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা : গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এক জেএমবি সদস্যে পনিরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) রাত ১১টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ ওই জেএমবি সদস্যের ফাঁসি কার্যকর করে।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া জেএমবি সদস্য হলো- ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার শাখা কানাইকরস্থান এলাকার ফজলুল হক চৌধুরীর ছেলে আসাদুজ্জামান পনির ওরফে আসাদ (৩৭)। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে তার কয়েদী নং ৫৪১/এ ছিল।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৫ সালে ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোণায় জেএমবির সক্রিয় সদস্য হিসেবে বোমা বিস্ফোরণে সহযোগিতা করে আসাদুজ্জামান পনির। ওই বোমা হামলায় ৮ জন নিহত এবং প্রায় ৫০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় জেএমবি সদস্য আসাদুজ্জামান পনির ওরফে আসাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একাধিক মামলা হয়। এরমধ্যে নেত্রকোনা থানায় মামলা নং- ০৮(১২)২০০৫ ধারা-১২০ বি/৩০২/৩৪/১০৯, আদালত ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশে আইনী প্রক্রিয়া শেষে জেএমবি সদস্য আসাদুজ্জামান পনির ওরফে আসাদকে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) রাত ১১টার দিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
২০০৫ সালের ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নেত্রকোণা মডেল থানায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করে। এর মধ্যে বিস্ফোরক আইনে আসামি জেএমবির কমান্ডার সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন ওরফে সোহেল, সদস্য আসাদুজ্জামান চৌধুরী ওরফে পনিরের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামি আসাদুজ্জামান চৌধুরী, সালাউদ্দিন ও ইউনুছ আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২। মামলার অপর আসামি সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী ফারজানাকে খালাস দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি আসাদুজ্জামান আপিল করেন। পাশাপাশি আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। জেএমবির সদস্য আসাদুজ্জামান হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। পরে ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ আপিল বিভাগ খারিজ করে দেয়। ফলে, সর্বোচ্চ সাজার আদেশই বহাল থাকে। পরে এই আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন আসাদুজ্জামান। গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বের আপিল বেঞ্চ আবেদনটি খারিজ করে দেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে নেত্রকোনা থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আরেকটি মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ড, কোতয়ালী থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলায় একটিতে ১০ বছর অন্যটিতে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়াও কোতয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এ ফাঁসি কার্যকরে ছিলো জল্লাদ শাহজাহান। মৃত্যু নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি ডাক্তার আশিফ রহমান ইভান।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোঃ গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর আইনী প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।