প্রতিবন্ধিকে ধর্ষণের রফার টাকা মাতুব্বরদের পকেটে : অবশেষে ধর্ষণ মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণার মদনের এক প্রতিবন্ধি তরুণীর ইজ্জতের মূল্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মাতুব্বরদের বিরুদ্ধে। অবশেষে বিচার চেয়ে ওই প্রতিবন্ধি তরুণী(২০)ধর্ষণ মাললা দায়ের করেছেন। মদন থানা পুলিশ ওই প্রতিবন্ধি তরুণীর ডাক্তারী পরিক্ষা (৯ জুন) বুধবার নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মদন উপজেলার মাঘান গ্রামের এক প্রতিবন্ধি মেয়ের সাথে মাঘান ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (আন্ছু ডাক্তার) এর ছেলে মাঘান কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি নাজমুলকে (১৩ এপ্রিল) রাতে অনৈতিক কাজে আটক করে স্থানীয় লোকজন। (১৩ এপ্রিল রাত- ১৪ এপ্রিল দিন) নাজমুলকে ওই তরুণীর বাড়িত আটক রাখা হয়। এ ঘটনায় (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ৯৯৯ ফোন পেয়ে মদন থানার এস আই মাসুদ জামালী ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে উদ্ধার করতে পারেননি। স্থানীয় মাতুব্বরগণ বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য ওই রাতেই মাঘান গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান(হবু)র বাড়িতে সালিশে বসেন। পরে ওই প্রতিবন্ধির ইজ্জতের মূল্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার্য্য করেন এলাকার মাতুব্বরগণ। অভিযুক্ত নাজমুলের বাবা রফিকুল ইসলাম জরিমানার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাই রফিকুলের হাতে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়। ওই টাকা প্রতিবন্ধি মেয়েকে না দিয়ে মাতুব্বরগণ নিজেদের পকেটে রেখে দেয়। এ ঘটনায় গত ৩ জুন ওই তরুণী বিচার চেয়ে বাদী হয়ে নাজমুল কে আসামি করে নেত্রকোণার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি তরুণী বলেন, নাজমুল গভীর রাতে বসত ঘরে ঢুকে আমার সাথে জোড়পূর্বক অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আটক করে। ওইদিন রাত ও পরের দিন নাজমুলকে আমার বাড়িতে আটকে রাখা হয়। পরে মাতুব্বর ও পুলিশ এসে নাজমূল কে নিয়ে যায়। আমাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সালিশে বসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে আমাকে কিছুই না দিয়ে নিজেরা(মাতাব্বরগণ) টাকা নিয়ে চলে যায়। আমি বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি।
কুলিয়াটি গ্রামের তায়েব এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মদন থানার এস আই মাসুদ জামালী জানান, (১৪ এপ্রিল) ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে আমি ঘটনা স্থলে গিয়েছিলাম। এ সময় কাউকে উদ্ধার করতে না পারায় থানায় চলে আসি।
সালিশের মাতুব্বর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর ঘটনার সত্যত্যা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করেছিলাম। জরিমানার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে কুলিয়াটি গ্রামের আমার ভাগ্নে তায়েবের কাছে রেখেছে বলে আমি শুনেছি। সালিশের আরেক মাতুব্বর রফিকুল ইসলাম জানান, জরিমানার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আমার ভাগ্নে কুলিয়াটি গ্রামের তায়েবের কাছে রাখছি। কিন্তু সে ভুক্তভোগীর পরিবারকে টাকা না দিয়ে নিজেই আত্মসাত করেছে।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুল হোসেন জানান, সিএইচসিপি নাজমুলের বিষয়টি জেনে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষেকে জানানো হবে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফেরদৌস আলম জানান, ওই তরুণীর ডাক্তারী পরিক্ষা জন্য বুধবার(৯ জুন) নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করি। মামলাটি তদন্তাধীন আছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।