বিশেষ প্রতিনিধি: ‘প্রিয় নয়, সত্য হতে চাই। পাঠে পাঠে আত্মজাগরণ’ শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে নেত্রকোণার দুর্গাপুরের গাভিনা গ্রামে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন জলসিঁড়ি পাঠাগারের বার্ষিক অধ্যয়ন সভা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন দুযোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব লেখক অর্ধেন্দু শেখর রায়।
পরে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চে ‘আত্মজাগরণে পাঠাগারের ভূমিকা’ নিয়ে আলোচনা সভা হয়। পাঠাগারের সভাপতি মানেশ চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা কলেজ শিক্ষক দীপক সরকারের পরিচালনায় বক্তব্য দেন, ছড়াকার শ্যামলেন্দু পাল, লোকগবেষক আলী আহম্মদ খান, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক স্বপন হাজং, চিত্রশিল্পী সোহেল প্রাণন, জেলা উদীচীর সহসভাপতি অধ্যাপক হারাধন সাহা, প্রাবন্ধিক স্বপন কুমার পাল, সুজন উপজেলা কমিটির সভাপতি অজয় সাহা প্রমুখ।
সন্ধ্যায় বিশিষ্ট ছাড়াকার ও প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল এবং চিত্রশিল্পী সোহেল প্রাণনকে গুণীজন সম্মাননা প্রদান করা হয়। সমাজ ও সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য তাঁদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
দুর্গাপুরের গাভিনা গ্রামের দীপক সরকারের প্রচেষ্টায় ২০০২ সাল থেকে এলাকার কয়েকজন তরুণ মিলে জলসিঁড়ি অধ্যয়নসভা নামে একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন। এরপর ২০১২ সাল থেকে জলসিঁড়ি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় ওই পাঠাগারে বর্তমানে সাড়ে ১২ হাজারের মতো বই রয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী মিলে প্রতিদিন শতাধিক পাঠকের সমাগম ঘটে পাঠাগারটিতে। পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠার বছর থেকে জলসিঁড়ি পাঠকেন্দ্রের উদ্যোগে প্রতিবছর দেশের বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক, গবেষক, কবি, সাহিত্যিক, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ও চিকিৎসককে এ সম্মননা দেয় জলসিঁড়ি সম্মাননা পর্ষদ। এ পর্যন্ত ৪১ জন বরেণ্য ব্যক্তিকে জলসিঁড়ি সম্মাননা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের নেত্রী কুমুদিনী হাজং, বিশিষ্ট বাকচিক শিল্পী হাসান আরিফ, যাত্রাশিল্পী গৌরাঙ্গ আদিত্য, জাহেদ আলী মঙ্গলা, ভাষাযোদ্ধা আজিম উদ্দিন আহম্মদ, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের তৎকালীন ওয়ারলেস অপারেটর মো. শাহজাহান মিয়া, কবি ও সাংবাদিক মামুন খান, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক বিধান মিত্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কবি তরুণ শিকদার, কবি স্নিগ্ধা বাউল অন্যতম।