মদনে সংঘর্ষে আহত ২৫ লুটপাট,হামলা: অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

স্টাফ রির্পোটার: বিলের একটি খেত দখল করাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোণার মদনে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুই নারীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহত সুজন মিয়া, নূর মিয়া, আবুল কালাম, হেলাল উদ্দিন, জিকুল মিয়া, আশিক মিয়া, আক্কাস আলী ও মো. কালাচানকে আশঙ্কাজন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শফিকুল ইসলাম, রুপ্তন মিয়া, শামিম মিয়া ও আরাফাতকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পযন্ত মদন ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের সামনের হাওরে আইন বিলে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাতটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পযন্ত ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলছিল।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম ও তার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা মদন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রহিছ মিয়া এবং তার পক্ষের লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে পক্ষ দুটির মধ্যে হত্যাসহ ১৫ থেকে ২০টির মতো মামলা রয়েছে। তাজুল ইসলামের পক্ষের লোক মানিক মেম্বার গত চার দিন আগে গ্রামের সামনে আইনবিলের এক একর ৪৫ শতাংশ ক্ষেতে বোরো ধানের চারা রোপন করেন। ওই জায়গাটি রইছ মিয়ার লোকজন খাস জায়গা দাবি করে তাদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মদন থানার পুলিশ রোপনকৃত জমির পাশে অবস্থান নেয়। পরে বিকেল পৌনে তিনটার দিকে রহিছ মিয়া পক্ষের শতাধিক লোকজন ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে খেতের রোপনকৃত বোরো ধানের চারা নষ্ট করে তাদের দখলে নিতে চায়। এতে মানিক মেম্বারের লোকজন বাঁধা দিলে পুলিশের সামনেই প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আলেয়া আক্তার, মরিয়ম বেগম নামে দুই নারীসহ অন্তত ২৫জন আহত হন। খবর পেয়ে নেত্রকোনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে। সন্ধ্যার দিকে আবার দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলে। বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের আব্দুল আহাদ তালুকদারের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার জানান, সন্ধ্যার সাতটার দিকে প্রতিপক্ষের কালাচান নামের একজন মারা যাওয়ার রিউমারে আমাদের পক্ষের অন্তত ১৫টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাংচুর করছে। পনেরোটি গরু নিয়ে গেছে। পুরুষ লোকজন বাড়ি ঘরে না থাকায় নারী শিশুদের মারধর ও নির্যাতন করছে।
এ ব্যাপারে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান জানান, দুপক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খালিয়াজুরি সার্কেলসহ আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি।’
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী রাত সাতটার দিকে বলেন, ‘ নেত্রকোনা থেকে আরও অতিরিক্ত ১৫ জন পুলিশ রওনা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে।’

মাসুদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার দক্ষিণ পাড়া গ্রামের সামনে দু-পক্ষের সংঘর্ষ ঘটায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খালিয়াজুরি সার্কেল) সহ পুলিশ ঘটনা স্থলে রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।