মদনে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ

মদন প্রতিনিধি: নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হাটশিরা বাজারে সরকারি জায়গা ও ঘর প্রভাবশালীরা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করায় সরকার বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকার প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে এ বাজারে গ্রোথ সেন্টার ও মহিলাদের জন্য মার্কেট নির্মাণ করলেও এলাকার প্রভাবশালীরা তাদের দখলে নিয়ে অন্যত্রে ভাড়া দিয়ে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মুনাফা লুটে নিচ্ছে। মহিলা মার্কেটে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উধাও হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই সরকার এ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
বুধবার হাটশিরা বাজারে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, গ্রোথ সেন্টারের খোলা সেডগুলো দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করায় ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে দোকান নিয়ে বসেছে। এতে পথচারী ও যান চলাচলে যাত্রীরা চরম দূর্ভোগে রয়েছে। এ বাজারে পাবলিক শৌচাগার দখলসহ সরকারি জায়গায় ৩৮টি অবৈধ দোকান ঘর নির্মাণ করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভাশালী চক্র।
এ সময় খোলা সেটে ঘর নির্মাণকারী মনোহরী ব্যবসায়ী হালিম কাজি জানান, আমার এক আত্মীয় বিচারপতির সুপারিশে আগের ইউএনও আমাকে খোলা সেটে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছেন। যারা বাজার ডেকে আনে তাদের কে টাকা দিয়েই আমি এখানে থাকি।
পাবলিক শৌচাগার দখল করে দোকান নির্মাণকারী আব্দুল কাদির জানান, শৌচাগারে ঘর নির্মাণের ব্যাপারে চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে জানেন।
ব্যবসায়ী মাহবুব তালুকার জানান, আমি ৪ বছর আগে ফতেপুর গ্রামের এখলাছ চৌধুরী ও আনার চৌধুরীর কাছ থেকে ঘরের পজেশন কিনেছি। এটা যে সরকারি জায়গা তখন তা আমার জানা ছিলো না।
বাজারের স-মিলের মালিক দুলাল চৌধুরী জানান, আমি আমার ক্রয়কৃত জায়গায় ব্যবসা করছি। তবে সরকারি জায়গায় বাজারে অনেক অবৈধ দোকান ঘর থাকলেও নায়েব টাকা নিয়ে চুপ থাকে।
বাজার কমিটির সভাপতি ফরিদ চৌধুরী জানান, এ বাজারে অবৈধ ও অপরিকল্পিত ভাবে সরকারি জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ করায় সরকার যেমন রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি ক্রেতা-বিক্রেতারাও নানা দূর্ভোগে আছে। পরিকল্পিত ভাবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের আশুহস্থক্ষেপ কামনা করছি।
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, অধিকাংশ ব্যবসায়ী সরকারি খাস জমিতে দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কর্র্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেও কোনো সুরাহা করা যাচ্ছে না। রাজস্ব আয় আদায় করার জন্য এদিকে দ্রুত যথাযথা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
ফতেপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা সৈয়দ জাহাঙ্গীপুর আলম জানান, হাটশিরা বাজারে অবৈধভাবে সরকারি জায়গায় ৩৮ টি দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করছে। এদের তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা প্রশাসনকে দেয়া হয়েছে। টাকা নেয়ারে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, হাটশিরা বাজারে সরকারি জায়গা সার্ভেয়ারের মাধ্যেমে নির্ধারণ করে অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।