দুর্গাপুর সীমান্তে কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটিত

বিশেষ প্রতিনিধি: ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে দুর্গাপুর থানাধীন ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’র কাছাকাছি দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় কচুর লতা কুড়াঁতে গিয়ে নিখোঁজের ৩৬ ঘন্টা পর পাহাড়ী আলু তোলার গর্ত থেকে কিশোরী হাফসানা বেগমের (১৬) লাশ উদ্ধারের ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।
নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, হাফসানা খাতুনের ভগ্নিপতি কলিকাপুর গ্রামের আবু হানিফের পুত্র আবুল কাশেম পাহাড়ে শ্যালিকাকে একা পেয়ে ফুসলিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। হাফসানা ঘটনাটি সবাইকে বলে দেয়ার কথা বলায় তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। শ্যালিকার জন্য তার অতি মায়া কান্না এবং ঘটনার দুদিন পর তার উপর মুখোশধারীদের হামলার ঘটনা সাজিয়ে তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার কারনে পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় আবুল কাশেমকে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করায় এক পর্যায়ে সে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে সে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী প্রদান করেন।
জেলার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তবর্তী কলিকাপুর গ্রামের দিনমজুর আবু ছালেক এর কনিষ্ট কন্যা হাফসানা মাদরাসায় পড়াশুনা করে আসছিলো। গত ১ জুলাই সকাল ১১টার দিকে মায়ের কথায় রান্নার জন্য হাফসানা কামারখালী পাহাড়ী টিলার আশপাশে কচুর লতা (সব্জি) কুড়াতে গিয়ে সে আর বাড়ী ফিরে আসেনি। পরিবারের লোকজন চারপাশে আফসানাকে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায়নি। ২ জুলাই সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় লোকজন ভারতীয় সীমান্তবর্তী বিএসএফ ক্যাম্প এর কাছাকাছি ঝর্ণা থেকে পানি আনতে গিয়ে পাহাড়ী আলু তোলার গর্তে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পায়। তারা তাৎক্ষনিক বিষয়টি দুর্গাপুর থানা পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ রাত নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখে কাপড় গুজানো ও গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কিশোরীর বাবা আবু ছালেক বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ঘটনার ৭ দিন পর ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে।
প্রেস-ব্রিফিংয়ে  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড-কোয়ার্টার) আল-আমিন হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খাতুন, সহকারী পুলিশ সুপার (দুর্গাপুর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।