বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া বাজার হতে বরুণা বাজার হয়ে তেনুয়া উচ্চ বিদ্যালয় পযন্ত সড়কটিতে শুধু ভোগান্তি বেড়েই চলছে। স্বাধীনতার পর থেকে এলাকাবাসী একটি পাঁকা সড়কের দাবি জানয়ে আসছেন, সময়ে সময়ে জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাসও দিচ্ছেন। কিন্তু বরুণা সড়ক সংস্কারে কেউ আর কথা রাখেনি।
দাবি আদায়ে এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বরুণা বাজারের সামনের সড়কে এলাকাবাসীর ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন, বজলুর রহমান, দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুর হামিদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর মোতালিব, স্কুল শিক্ষক রেজাউল করিম, মো. রাসেল, ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক, পল্লী চিকিৎসক বাবুল মিয়া, বরুণা জামে মসজিদের ইমাম বিদ্যা মিয়া প্রমুখ।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদ কাযালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ বিশিউড়া বাজার হতে বরুণা বাজার হয়ে তেনুয়া উচ্চ বিদ্যালয় পযন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কটি পাঁকা সড়কে পরিণত করতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। এই সড়ক দিয়ে আশপাশের ১০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজারের মতো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। জেলা শহরসহ পাশের উপজেলা পূর্বধলা ও কেন্দুয়ায় এলাকাবাসীদের যোগাযোগের এটিই একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। এতে এ অংশ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এই সড়টি দিয়ে প্রতিদিন মানুষ উপজেলা সদরসহ পাশের পূর্বধলায় আসা-যাওয়া করে। অনেক দিন ধরে সড়কটি ভাঙাচোরা। তা সংস্কারে পরিষদে কোন বাজেট নেই। বারবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় সড়কের বেহাল অবস্থার বিষয়টি তুলে ধরে এলজিইডির কর্মকর্তাদের কাছে এটি সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
দক্ষিণ বিশিউড়া গ্রামের অটোরিকশার চালক সুলেমান মিয়া বললেন, ‘দিন দিন রাস্তাটি খারপ হইতাছে। রাইতে (রাতে) এই রাস্তা দিয়া গাড়ি চালানি রিস্ক (ঝুঁকি) বেশি। আর বৃষ্টি হলেই পিছলা ও কাদা হইয়া যায়। তখন গাড়ি গাতে (গর্তে) আটকে পড়ে। যাত্রীদের কষ্ট হয়।’
স্থানীয় বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা ভোট চাইতে আমাদের কাছে এলে প্রথমেই বলেন জয়ী হলে সড়কটি পাঁকা করে দেবেন। কিন্তু পাশ করে আর গ্রামবাসীর খোঁজখবর নেন না। বরুণা সড়ক নির্মাণে কেউ আর কথা রাখেননি।’
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নেত্রকোণা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি আমি খুঁজ নিয়ে দেখছি। এই সড়কটির আইডি নম্বর আছে কি-না। না থাকলে দ্রুত একটি প্রকল্প তৈরি করে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’