নেত্রকোণার চারটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে : ভেঙে যাচ্ছে একমাত্র সড়কও

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারাঞ্চলে কংস নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে চারটি গ্রামের চার শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর। হুমকির মুখে রয়েছে আরো পাঁচটি গ্রাম। ভেঙে যাচ্ছে জেলা শহর থেকে চলাচলের একমাত্র সড়কটিও। সম্প্রতি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এখনি ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হয়ে যাবে আরো চারটি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার।
বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারাঞ্চলের কর্ণুপুর, চরপাড়া, পাঁচপাই ও বাঘরুয়াসহ কয়েকটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর চলে গেছে নদী গর্ভে। হুমকির মুখে রয়েছে আরো পাঁচটি গ্রামের বাড়িঘর। হুমকির মুখে রয়েছে ঠাকুরাকোণা ফকিরের বাজার সড়কের চরপাড়া এলাকায় আধাকিলোমিটার অংশ। নদীর ভাঙনে আতংকে রয়েছে নদীর পাড়ের স্থানীয় লোকজন ।
চরপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার জানান, কয়েক বছর ধরে কংস নদের ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চরপাড়া-কর্ণপুর দুই গ্রাম মিলে প্রায় পাঁচশতাধিক বাড়িঘর। মানুষজন বসতভিটা হারিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে সড়কটিও। সড়কটিসহ ওই দুই গ্রামে নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধ না দিলে আরো কয়েক হাজার বাড়ি ঘর হুমুকিতে রয়েছে।
কর্ণপুর গ্রামের পংকজ মজুমদার জানান, আমরা কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। স্থায়ী বাঁধের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। আমাদের জমি জমা বাড়িঘর সব কিছু নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। সবশেষ সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি সরেজমিনে এসেছিলেন। ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে দ্রুত স্থায়ী বাঁধের আশ^াস দেন।
কর্ণপুর গ্রামের বসতবাড়ি হারানোর সাহেব উদ্দিন, আব্দুল মন্নাফ, স্বপন সরকার, সত্যেন্দ্র বর্মণ, সবুর মিয়া ও সেলিম মিয়া জানান, এরিমধ্যে বাড়িঘর সব নদী গর্ভে চলে গেছে। অন্যের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়ে আছি। নিজের বাড়িঘর বাপের আমলের বাড়ি সব আজ কংসে বিলীন হয়েছে। আজ পর্যন্ত কেউ খোঁজ নিতে আসেনি। শুধু বাড়িঘরই নয় ফসলি জমিও চলে গেছে নদী গর্ভে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে এখন শত শত পরিবার উদ্ভাস্তু হয়ে পরেছে।
বারহাট্টার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু জানান,কর্ণপুর চরপাড়া,ফকিরের বাজারসহ অন্তত চারটি গ্রামের শহস্রাধিক পরিবারের বসত ভিটা হারিয়েছে। শত শত একর জমি চলে গেছে নদী গর্ভে। বর্ষার শুরুতে পানি বাড়তে শুরু করায় বাড়ছে কংস নদীর ভাঙন। চোখের সামনে ন বাড়ীঘর সহ ফসলি জমি নদীতে চলে যায়। গ্রাম রক্ষা বাঁধ সহ সড়কটি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন ফল হয়নি বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আক্তারুজ্জামান জানান, নদীর ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড অবগত আছে। নদী ভাঙনটির স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সড়কের স্থানটিকে সাময়িক রক্ষার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।