কেন্দুয়ায় নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই কালভার্টে ফাটল

কেন্দুয়া প্রতিনিধি: নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় বলাইশিমূল ইউনিয়নের আমলিতলা বাজার-সয়রাপাড়া সড়কের আমলিতলা বাজার সংলগ্ন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। কালভার্টের সাথে এপ্রোচ সড়কের চারদিকের মাটি ধরে রাখার উইং ওয়াল হেলে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও পরিমাণে কম দেওয়ায় এটি হয়েছে। অপরদিকে কেন্দুয়ার উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান বলেন, ভিকু দিয়ে মাটি ভরাটের সময় চাপে এমনটি হয়েছে।
সরকারি বিধান অনুযায়ী প্রকল্প এলাকায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম, কার্যাদেশ শুরু ও শেষের তারিখ, প্রাক্কলিত মূল্য সম্বলিত সাইনবোর্ড ঝুলানোর নিয়ম থাকলেও তা স্থাপিত হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদারের নাম অসীম সিংহ বলতে পারলেও কালভার্টের দরপত্র মূল্য কত ধরা হয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। অনুমান করে বলেন সাত থেকে আট লক্ষ টাকার মতো হবে। কালভার্টের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা এবং কার্যাদেশ কতদিন আগে দেয়া হয়েছে এর সঠিক তথ্য মেলেনি। তবে বলেছেন এক মাসের কম-বেশীর মতো হবে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার।
উপজেলার আমলীতলা বাজারের পাশে নির্মাণাধীন কালভার্টের এপ্রোচ সড়কে মাটি ভরাটের সময় ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে এর বিভিন্ন অংশ। ধসে পড়া অংশে হাত দিলেই খসে পড়ে ব্যবহারকৃত সিমেন্ট-বালু। নির্মাণে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় কালভার্টটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কালভার্ট ব্যবহারের জন্য উন্মোক্ত হতে না হতেই এবং নির্মাণের কাজ শেষে হস্তান্তরের আগেই যদি এ হাল হয় তাহলে কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে এমন প্রশ্ন রাখেন স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসী।
স্থানীয় আজমল হোসেন বলেন, এটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ভেঙে পড়া শুরু করছে। তার দাবী পুনরায় কালভার্টটি নির্মাণ করে দিতে হবে তা-না হলে এলাকাবাসী মানবে না।
অসিম সিংহ ঠিকাদারীর প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপালনকারী তার ছোট ভাই বিপ্লব সিংহের সাথে সেলফোনের কথা হলে তিনি নির্মাণ কাজটি সঠিক তথ্য জানেন না। তবে কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সঞ্জু মিয়ার সেল নাম্বার দিয়ে বলেন তিনি কাজটি করাছেন এবং তার কাছে তথ্য পাওয়া যাবে।
পরে গন্ডা ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. সঞ্জু মিয়ার সাথে মোবাইলে  কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।
স্থানীয় বলাইশিমুল ইউনিয়নের চেয়াম্যান মো. আলী আকবর তালুকদার মল্লিক স্থানীয়দের অভিযোগের সাথে সত্যতা স্বীকার বলেন, ফাটল সহ এপ্রোচ সড়কের মাটি ধরে রাখার জন্য কালভার্টটির চারদিকের দেয়াল (উয়ইং ওয়াল) হেলে পড়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করেছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
এলজিইডি’র কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান  জানান, যোগদানের ৫-৬ মাস আগেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কার্যাদেশের সঠিক মূল্য, কালভার্টটির দৈর্ঘ, প্রস্থ, উচ্চতা এই মূহুর্তে সঠিকভাবে বলতে পারছি না। তবে কার্যাদেশ মূল্য সাত থেকে আট লক্ষ টাকার মধ্যে হবে। ঠিকাদার অসীম সিংহের হয়ে চেয়ারম্যান সঞ্জু মিয়া ও তার ভাই দেখাশুনা করছে। ফাটলের বিষয়ে বলেন, ভিকু দিয়ে মাট ভরাটের সময় এমনটি হয়েছে। বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং এটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে কোন বিল প্রদান করা হয়নি।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।