
স্টাফ রির্পোটার: অবশেষে উন্মুচিত হল বারহাট্টায় শিশু খুুুুনের রহস্য। টানা চার দিন তদন্ত শেষে চাঞ্চল্যকর মণি আক্তার হত্যা মামলার তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) এস এম আশরাফুল আলম দ্রুত সময়ে এই রহস্য উদঘাটন করেন।
বারহাট্টায় শিশু শিক্ষার্থী মণি আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলের গর্ত থেকে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মণি আক্তার (১২) নামে এক স্কুল ছাত্রীর লাশ। পহেলা মে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এঘটনায় সুলতান নামের এক যুবককে গ্রেফতার করলে ঘটনার দায় স্বীকার করে ওই যুবক। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো: আকবর আলী মুন্সী।
এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রাশিদের ছেলে সুলতান উদ্দিন (২৫) কে। গ্রেফতারের পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রধান আসামী সুলতান উদ্দিন ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
নিহত মণি আক্তার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের আব্দুল মন্নাফের মেয়ে। সে একই গ্রামের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। এঘটনায় পরদিন শিশুটির বাবা আব্দুল মন্নাফ বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় অজ্ঞাতজনদের আসামী করে মামলা দায়ের করে।
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, নিহত মণি আক্তার ও তার কয়েকজন সহপাঠী মিলে প্রতিদিনের মতো পাশের নয়পাড়া গ্রামের তালেব আলীর কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। গত ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে মণি বাড়ি থেকে বের হয়। পরে পৌনে ১১টায় ওই শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে লেখা-পড়া শেষে সেখান থেকে প্রায় সাড়ে ১২টায় চলে আসে। এরপর বাড়িতে আর ফিরে আসেনি। তাদের বাড়ি থেকে ওই গৃহ শিক্ষকের বাড়ি প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটের হাঁটার পথ। মণি বাড়িতে না আসতে দেরি হওয়ায় দুপুরে পরিবারের লোকজন খুঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হয়ে রাতে স্থানীয় ফকিরের বাজারে অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িতে সংবাদ দেওয়া হয়। নিখোঁজ হয়েছে মর্মে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এরপরদিন শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টায় স্থানীয়রা একই গ্রামের মান্দারতলা এলাকায় একটি বাড়ির পেছনে জঙ্গলের গর্তে মণির হাত-পা অবস্থায় মৃত দেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ওইদিন পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এসএম আশরাফুল আলম, বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানসহ পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) এসএম আশরাফুল আলম জানান, ঘটনার পর চারদিন ধরে বিষয়টি তদন্ত শুরু করি। বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুলতানকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুলতান জানায়,“৩০ এপ্রিল সকালে মণি আক্তার প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় তাকে দেখে সে উৎ পেতে তাকে। শিশু শিক্ষার্থী মণি প্রাইভেট থেকে ফেরার পথে তাকে ডেকে সুলতানের ঘরে নিয়ে যায়। এবং সেখানে ওই শিশুকে ধর্ষণ করা সময় চিৎকার করলে গলায় টিপে ধরায় সময় সে মারা যায়। এরপর নিহত মণিকে কাপড় দিয়ে ডেকে রেখে দেয়। ওইদিন সন্ধার পর শিশুটিকে বাড়ির পাশের জঙ্গলে ফেলে রেখে সে সুলতানের শ^শুর বাড়ি দশধার চলে যায়। এবং সেখানেই অবস্থান করে। পরে তাকে সোমবার দিবাগত রাতে দশধার গ্রামে সুলতানের শ^শুর বাড়ির পাশ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদে সুলতান মণিকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।”