নেত্রকোণায় চিকিৎসকসহ আরো ১০ জনের করোনা শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: নেত্রকোণায় রবিবার এক চিকিৎসকসহ আরো দশজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মোহনগঞ্জ উপজেলায় ছয়জন, আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের এক চিকিৎসকসহ তিন জন ও মদনে একজন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে সাতান্ন জন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষায় ওই লোকজনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে।
মোট আক্রান্ত ৫৭ জনের মধ্যে ৪০ জনই পোশাককর্মী। বাকিদের মধ্যে চার জন চিকিৎসক, পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মী, একজন হাসপাতালের ঝাড়ুদার, একজন এনজিওকর্মী, দুজন রাজমিস্ত্রির সহযোগী, দুজন কৃষক ও একজন শিশু। এ ছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে ৪৭ জনই বাইরের জেলা থেকে এসেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা সির্ভল সার্জনের কাযালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩মে রবিবার মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় মোট ৫৭ জন করোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে আগত। বাকিদের মধ্যে নরসিংদী, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলা রয়েছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্ষে আসা ব্যক্তির সংখ্যা মোট ১৪২ জন এবং মোট চিহ্নিত স্পট ২৫ টি।
এ দিকে, গত কয়েক দিন ধরে জেলায় করোনাভাইরাসে উপসর্গে আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবের পর্যাপ্ত সক্ষমতার অভাবে এমনটা হচ্ছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় সাত দিন নমুনা পরীক্ষা বন্ধ ছিল।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর মেশিনে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুরের পাশাপাশি সুনামগঞ্জের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ মেশিনে প্রতিদিন দুইবারে গড়ে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু পাঁচটি জেলা থেকে প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে আরও অনেক বেশি। এ কারণে যেদিনের সংগৃহীত নমুনা সেদিন পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। গত বুধবার থেকে নেত্রকোনার বিশেষ প্রয়োজনীয় কয়েকটি ছাড়া আর কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান সালমা আহমাদ জানান, আমরা দিনে দুইবারে ১৮৮টির বেশি নমুনা পরীক্ষা করতে পারছি না। এরই মধ্যে আমাদের ল্যাবে প্রায় সাড়ে সাতশর মতো নমুনা জমা হয়ে রয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পিসিআর মেশিন দিয়ে পৃথক আরেকটি ল্যাব চালু করার কথা রয়েছে। এটি চালু হলে আরো ১৮৮ টির মতো নমুনা প্রতিদিন পরীক্ষা করা যাবে।’
নেত্রকোনার সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম খান জানান, গত ২ এপ্রিল থেকে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলের ল্যাবে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত জেলার ১২২৭টি নমুনার মধ্যে গত শুক্রবার পর্যন্ত ৮৫৬ টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। বাকি নমুনার প্রতিবেদন এখনো পাইনি। এ কারণে রোগী শনাক্তকরণে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, জেলায় একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।