মজা করে ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা তারা

বিশেষ প্রতিনিধি: ত্রাণ পাওয়ার উপযোগী নন তারা। একজন ঠিকাদার, অপরজন ব্যবসায়ী। তারপরও মজা করে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে সরকারি ত্রাণ চান। এরপর রাতের আধারে প্রশাসনের লোকজন ত্রাণ নিয়ে হাজির হন ওই দুই ব্যক্তির বাড়িতে। পরে তারা তামশা করে জানান, কোন ত্রাণ সামগ্রীর প্রয়োজন নেই, মজা করতে খামখেয়ালিভাবে ফোন দেওয়া হয়েছিল। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার রাতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের ধোবারুহি গ্রামে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ধোবারুহি গ্রামের বাসিন্দা মো. হারুন অর রশিদ (৫৫) ও মো. আবুল বাশার (৩৮)। তাদের মধ্যে হারুন অর রশিদ ঠিকাদারি কাজ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালত সশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই ব্যক্তি করোনার কারণে বাইরে যেতে পারছেন না। কাজ-কর্ম না থাকায় ঘরে খাবারও নেই বলে গত সোমবার সন্ধ্যায় সরকারি জরুরি সাহায্য সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে সাহায্য চান। পরে সেখান থেকে ওই বার্তা নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামকে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক সঙ্গে সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুমকে ওই দুই ব্যক্তির ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে রাত আটটায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পূর্বধলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমানকে নিয়ে পাশাপাশি ওই দুই বাড়িতে যান। এ সময় সাহায্য প্রার্থীরা জানান, তাদের ত্রাণের বা খাবারের কোন অভাব নেই। মজা করে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেছিলেন। খামখেয়ালিপনার এই অপরাধে এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। আদালতে ওই দুই ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেন। পরে আদালত ত্রাণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আইন ২০১২ এর ৩৮ ধারায় হারুন অর রশিদকে ২৫ হাজার টাকা জরিমান করেন। অনাদায়ে ১৫ দিনের জেল এবং আবুল বাশারকে ৩ হাজার টাকা অনাদায়ে তিন দিনের জেল ঘোষণা করেন। অবশ্য টাকা দিয়ে ওই দুই ব্যক্তি মুক্তি লাভ করেন।
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম জানান, ‘সরকারি ত্রাণ নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য যাদের কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ হারুন অর রশিদ পেশায় একজন ঠিকাদার। অপর জন ব্যবসায়ী। তাঁদের ঘরে যথেষ্ট খাবার মজুদ রয়েছে এবং ত্রাণের প্রয়োজন নেই। মজা করে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে তারা এই কাজ করেছিলেন । পরে আদালত তাদের এই দণ্ড প্রদান করেন।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।