খালিয়াজুরীর হাওরে দুর্বৃত্তরা নষ্ট করে দিয়েছে রহিমার কুমড়ার ক্ষেত

খালিয়াজুরী প্রতিনিধি: খালিয়াজুরীর ধনু নদীর চরে সবুজ সামিয়ানার লুকিয়ে ছিল বিধবা রহিমা খাতুনের স্বপ্ন। চরের বুক জুড়ে ফুটেছিল কুমড়ার ফুল, পরিপক্ব হচ্ছিল স্বপ্নের মিষ্টি কুমড়ার ক্ষেত।
আর ক’দিন পরই আকাঙ্খার ফলন হলে মিষ্টি কুমড়া বাজারে উঠতো। সরাসরি বেপারী এসে কিনে নিয়ে যেত ক্ষেত থেকে। সেই মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে যে টাকা আসতো সেই টাকায় চলতো জীবনের চাকা,সন্তানের পড়াশোনার খরচ, নতুন কাপড়, ঔষধপথ্য। কিন্তু কৃষাণীর সব স্বপ্ন বিলীন করে দিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। বুধবার রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা মিষ্টি কুমড়ার গাছ কাস্তে দিয়ে কেটে দিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মিষ্টি কুমড়া নষ্ট করেছে। এতে মলিন হয়েছে কৃষাণীর মুখের হাঁসি।
আদর্শ দরিদ্র কৃষাণী রহিমা খাতুনের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে। তার স্বামীর নাম শাহিদ হোসেন ১০ বছর আগে দুটি সন্তান রেখে মারা যান। রহিমা জীবিকার তাগিদে তিন বছর ধরে জগন্নাথপুরের ধনু নদীর চরে মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য শুকনো ফসল চাষ করেন। আর এই রবিশস্যের আয় দিয়েই কয়েক বছর ধরে তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এবার প্রায় এক একর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবছর ফসল অনেক ভালো হয়েছে। এই মিষ্টি কুমড়াকে ঘিরে এবারও মনে অনেক স্বপ্ন বুনেছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষাণী রহিমা বলেন, এই শুকনো ফসল আবাদ করে আমার এতিম বাচ্চাদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে চলি। আমার অন্য কোন গৃহস্থালি নেই। কারা এই সর্বনাশ করলো জানিনা।আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, আমি এই খবর পেয়েই সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি।উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আদর্শ কৃষাণী রহিমা খাতুনকে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন প্রদর্শনী দিয়েছি। ফসল অনেক ভালো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে কাস্তে মিষ্টি কুমড়ার গাছের গুড়া কেটে দিয়েছে। আমি বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
খালিয়াজুরী থানার অফিসার ইনচার্জ এটিএম মাহমুদুল হক বলেন, এ ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।