দুর্গাপুরে খেলার মাঠ নষ্ট করে চলছে রমরমা বালুর বাণিজ্য !

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: ‘‘ক্রীড়াই শক্তি ক্রীড়াই বল-সুস্থ্য দেহ সুন্দর মন’’ দুর্গাপুরে এই প্রবাদটি যেন ভেস্তে যেতে বসেছে। মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিপরীতে মাঠ নষ্টে বাঁধা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এমনই এক ঘটনা ঘটছে জেলার দুর্গাপুর পৌরশহরের বিরিশিরি পিসিনল উচ্চ বিদ্যালয়‘র খেলার মাঠে।

এ নিয়ে বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, দীর্ঘদিনের খেলার মাঠ নষ্ট করে নদীর ঘাট থেকে বালি পরিবহন করার জন্য ট্রাক, লড়ি সহ নানা পরিবহন মিলে প্রায় ৩শ থেকে ৪শ গাড়ী চলছে ওই রাস্তা দিয়ে। মাঠ দিয়ে ট্রাক চলাচলের জন্য প্রতি ট্রাক থেকে ২৫০টাকা করে চাঁদা রাখছে জিবিসি (গারো ব্যপ্টিষ্ট কনভেনশন) অনুমোদিত একটি মহল। মাঠের উপর দিয়ে বালি বোঝাই ট্রাক চলাচল না করা এবং নিজেদের জায়গা দাবী করে নেত্রকোণা জেলা জজ আদালতে একটি মামলা রয়েছে। উক্ত মামলার বিপরীতে বিজ্ঞ আদালত ওই মাঠ দিয়ে কোন প্রকার যান চলাচল করবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। খেলার মাঠ দিয়ে যান চলাচলা করায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আদিবাসী নেতা বলেন, যেখানে খোদ জিবিসি কর্তৃপক্ষ এই চাঁদা উঠানোতে জড়িত রয়েছে সেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা করবে কি? আইন লঙ্ঘন করে মামলার বিষয়টি আড়াল করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কারনে খেলার মাঠ দিয়ে গাড়ী চলাচলের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। মাঠের পুরো অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থী, এলাকার সিনিয়র সিটিজেন সহ শিশুরাও বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলার সুযোগ থেকে।

খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর ৫নং ধারায় বলা আছে, খেলার মাঠ, অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর করা যাবে না। এই আইন লঙ্ঘনে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় সাজার বিধান রয়েছে। কিন্ত এই বিধানকে বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়ে জিবিসি কর্তৃপক্ষ মাঠ ব্যবহারে বালু ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মাঠ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে ক্রীড়ামোদী জনগন সহ সর্বস্থরের শত শত জনতার অংশগ্রহনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।

এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, খেলার মাঠ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এ নিয়ে নেত্রকোনা জজ কোর্টে মামলাও চলমান, মাঠ থেকে টাকা উঠানোর ব্যপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।

স্কুল এসএমসি সভাপতি সহ:অধ্যাপক সমরেন্দ্র রিছিল বলেন, আমরা অনেকাংশে জিম্মি হয়ে গেছি। আমাদের দুর্বলতার কারনেই সুযোগ নিচ্ছে নানা মহল। টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জিবিসি সভাপতি শৈবাল সাংমা‘র সাথে কথা বলতে বলেন।

এ বিষয়ে জিবিসি সভাপতি শৈবাল সাংমা মাঠ থেকে চাঁদা উঠোনোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, মাঠের জায়গা জিবিসি‘র নামে রয়েছে, মাঠকে কেন্দ্র করে মামলাও চলছে এর বেশি আর কিছু বলতে পারবো না।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।