শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে এক সপ্তাহে দু’বার ভাঙ্গলো কালভার্ট

স্টাফ রির্পোটার: মাত্রাতিরিক্ত বালুবোঝাই ট্রাক চলাচল করায় সংস্কারের তিন দিন পর বক্স কালভার্টের স্থলে বসানো বেইলি সেতুটিও এবার শনিবার সকাল থেকে ভেঙ্গে গেছে। এতে করে দুর্গাপুরের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এরআগে নেত্রকোণার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া গোজাখালিকান্দা আনসার ক্যাম্প এলাকায় বক্স কালভার্টটি গত সোমবার বিকেলে বক্স কালভার্টটি ভেঙ্গে যায়।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে প্রতি দিন তিন হাজারের বেশি ট্রাক ৩৫ থেকে ৪০ টন করে ভেজা বালু নিয়ে চলাচল করে। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা কেউ মানছে না। তাই বক্স কালভার্টের স্থলে বসানো বেইলি সেতুটিও অতিরিক্ত চাপ বহন করতে না পেরে ভেঙ্গে গেছে। এখানে নতুন করে একটি বক্স কালভার্ট স্থাপন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এভাবে অনবরত মাত্রাতিরিক্ত বালুবাহী ট্রাক চলতে থাকলে ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত সড়কটিও ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি ৩৭ কিলোমিটার সড়কটি ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে প্রশস্তকরণসহ সংস্কার কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালের জুন মাসে তা শেষ হয়। ২৪ ফুট প্রস্থ এই সড়কের ব্যয় হয় ৩১৬ কোটি টাকা। কিন্তু সড়কের পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া গোজাখালিকান্দা আনসার ক্যাম্প এলাকায় পুরাতন বক্স কালভার্টটি সংস্কার হয়নি। ফলে গত সোমবার বিকেল সাড়ের তিনটার দিকে অতিরিক্ত বালুবোঝাই ট্রাক পাড় হতে না হতেই কালভার্টটি ভেঙ্গে ডেবে যায়। তারপর ওই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন তিন দিনের চেষ্টায় গত বুধবার রাতে একটি বেইলি সেতু স্থাপন করে। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু তিন দিন যেতে না যেতেই গত শনিবার সকালে বালুবোঝাই ট্রাক পার হওয়ার পর আবারো বেইলি সেতুটি ভেঙ্গে যায়। এতে করে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ জায়গা জুড়ে যানজটের সৃষ্টিসহ সড়ক যাতায়াতকারী লোকজনদেরকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ
সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ছাড়াও পার্শ্ববতী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলাসহ প্রায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ যাতায়াত করে। স্কুল-কলেজে যাওয়া-আসা করে কয়েক’শ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া প্রতিদিন সহস্রাধিক পর্যটক দুর্গাপুর ও কলমাকান্দার পাহাড় দেখতে যান। সারা দেশ জুরে দুর্গাপুরের সোমশ্বেরী নদীর বালুর চাহিদা থাকায় প্রতিদিন দুর্গাপুর থেকে প্রায় তিন হাজারের মতো বালুবাহী ট্রাক-লড়ি সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেতুটি সংস্কারকাজ শেষ হয়নি। এতে করে যান চলাচলকারীদের ভোগান্তি হচ্ছে।
নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী বায়েজিদ বাঙালি বলেন, ‘জামালপুর থেকে বেইলির পাটাতন, ট্রানজিয়াম, ডেকিংসহ প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে বক্স কালভার্টের স্থলে বেইলি সেতু বসানো হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত ওজন সইতে না পেরে আবারো ভেঙ্গে যায়। এবার ঢেউটুকোন খেয়াঘাট থেকে বেইলির উপাদান সংগ্রহ করে সংস্কার কাজ চলছে। এতে একটু সময় লাগছে। আশা করা যায় সোমবারের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে।’

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।