বিআরটিসি’র দ্বিতলবাসগুলো চালুর দাবিতে নেত্রকোণায় মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ সড়কে বন্ধ করে দেওয়া বিআরটিসির দ্বিতল সেই বাসগুলো চালুর দাবিতে এবার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। শনিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পৌরসভা কাযালয়ের সামনের সড়কে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে নেত্রকোণা সরকারি কলেজ, নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজ, আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধ চলাকালে বক্তব্য দেন, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ ইসলাম, সাফিন আহম্মেদ, রনি মিয়া, আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফাহিম জাহান, আব্দুস সামি, তানিম উসমান, সুলতান মাহমুদ, আয়েশা সানি, ইসরাত জাহান, সাদিয়া তাহসিন প্রমুখ। পরে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ ইসলাম, ফাহিম, তনয়, পলাশ, রবিন, মাহি প্রমুখবলেন, ‘নেত্রকোনা থেকে ময়মনসিংহ চলাচলের জন্য ভালো মানের কোন বাস নেই। দীর্ঘদিনের দাবির পর প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সম্প্রতি ১০টি ডাবল ডেকার বাস চালুর জন্য উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু মুনাফালোভী বেসরকারি বাস মালিক সমিতির সদস্যরা ও শ্রমিকরা তা বন্ধ করে দেন। বিষয়টি জানতে পেরে এর প্রতিবাদে আমরা স্বেচ্ছায় এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা প্রশাসন, বিআরটিসি ও বাস পরিবহণ মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত রোববার সকাল নয়টার দিকে জেলা শহরের নাগড়া কৃষিফার্ম এলাকায় নেত্রকোনা থেকে ময়মনসিংহ সড়কে চলাচলের জন্য বিআরটিসির ১০টি দ্বিতলবাস সার্ভিসের উদ্বোধন করা হয়। সংরক্ষিত মহিলা আসনের স্থানীয় সাংসদ ও জেলা মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা রহমান খান প্রধান অতিথি হয়ে সার্ভিসটির উদ্বোধন করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়াসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনের চার ঘণ্টা পর বেলা একটার দিকে বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংসদ হাবিবা রহমানের উপস্থিতিতে গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পৌরসভার সামনের সড়কে নেত্রকোণাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। এতে বিভিন্ন সামাকি-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়া নানা শ্রেণি-পেশার শত শত লোক অংশ নেন। মানববন্ধন ও সমাবেশের পর ওই দিন বিকেল তিনটার দিকে বাস মালিক সমিতি উল্টো ধর্মঘট ডেকে নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ ও ঢাকাসহ দূরপাল্লার সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে বাস পরিবহণ মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় সভার পর অবশেষে গত মঙ্গলবার রাত আটটা থেকে ধর্মঘট প্রত্যার করা হয়। কিন্তু মালিক সমিতির লোকজন সরকারের দেওয়া বিআরটিসির বাসগুলো চলতে দেয়নি। এতে জেলাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর গত বুধবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রশাসন ও বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। কিন্তু বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ১০টি দ্বিতল বাসের পরিবর্তে পাঁচটি সিঙ্গেল বাস চালুর। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ওই সড়কে দুটি সিঙ্গেল বাস চলাচল করছে। এতে নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের ভোগান্তি রয়েই গেলো। প্রতিদিন ওই সড়কে নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫ হাজারের বেশি মানুষ চলাচল করে।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বলেন, ‘আপাতত পাঁচটি সিঙ্গেল বাস চলাচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুটি বাস গত বৃহস্পতিবার থেকে চলছে। আরো তিনটি কিছু দিনের মধ্যে যুক্ত হবে। এ ছাড়া দ্বিতল বাসগুলো ওই সড়কে চলাচল করতে বিভিন্ন পযায়ে আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত এ বিষয়ে সমাধান মিলবে।’

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।