কেন্দুয়ার সেই জরিনা বেগমকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দিলেন জেলা প্রশাসক

বিশেষ প্রতিনিধি : জরিনা আক্তার বয়স ৭১ বছর। ১০ সন্তানের মা তিনি। দশ সন্তানের মধ্যে সবাই কর্মক্ষম। এরমধ্যে সাত ছেলে ও তিন মেয়ে।

নেত্রকোণার কেন্দুয়া পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের হরিয়ামালা গ্রামের বাসিন্দা জরিনা বেগম (75)। স্বামীর ভিটেতেই একটি টিনের চালা নির্মাণ করে সেখানে কোনমতে জীবন যাপন করছেন। নেই পানীয় জলের সুবিধা ও শৌচাগার। নানা অসুবিধার মধ্য দিয়ে এখানে থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন নির্বাহ করছেন তিনি। ১০ সন্তান থাকার পরও জরিনা বেগম ভিক্ষাবৃত্তির বিষয়টি ইতিমধ্যে জাগোনিউজে প্রচার হয়। এ খবরে কল্যানী ফাউন্ডেশন এগিয়ে আসে তার ভরন পোষণের দায়িত্ব নেন।
এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে অসহায় বৃদ্ধাকে দ্রুত বয়ষ্কভাতার কার্ড সহ সার্বিক সুবিধা দিতে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউনুস রহমান, কল্যানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি কল্যানী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে জরিনা আক্তারের হাতে বয়ষ্ক ভাতা কার্ড (বই) তুলে দেন।
এসময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জানান, একজন বৃদ্ধার মৃত্যুতে একটি কার্ড স্থগিত থাকায় ওই কার্ড ২০১৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে বর্তমান ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা রয়েছে । এই বয়স্ক ভাতার বইটিতে বাড়তি টাকাসহ জরিনা বেগমকে দেয়া হয়েছে।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম জানান, তার নিয়মিত ভাতার সঙ্গে ৩ মাস পর পর ৩ হাজার টাকা যুক্ত করে দেয়া হবে। এছাড়া তার যাবতীয় বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে কী উন্নয়ন করা যায় তা আমরা সবই দেখব। ভরন পোষণ আইনে যদি জরিনা বেগম মামলা করেন সে ক্ষেত্রে লিগাল এইডের মাধ্যমে বিনা পয়সায় তাকে আইনগত সহায়তা দেয়া হবে। জরিনা বেগম কার্ড হাতে পেয়ে বলেন, আমি খুব খুশি, আমাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়ে আমার খোঁজ খবর নেয়ার জন্য। সন্তানদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি ১০ সন্তানের মা হয়েও ভিক্ষা করি। আমাকে আমার ছেলে বউ ও নাতী নাতনীরা নানা ভাবে অত্যাচার উৎপীড়ন ও গালিগালাজ করে। আমি এসবের বিচার চাই।

নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড সহ প্রয়োজনীয় সকল সরকারি সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। উনার খোঁজ খবর রাখতেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।