
মদন প্রতিনিধি: গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় নেত্রকোণার মদনে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত কৃষক সোহেল মিয়া (৪০) মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত সোহেল মিয়া বারবুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ শুক্রবার সকালে মোনামিন, রানু মিয়া, সেলিম মিয়া, হৃদয় মিয়া ও লাকি আক্তার নামে পাঁচজনকে আটক করে। পরে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মদন সদর ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক গৃহবধূর ঘরে একই গ্রামের হিজরা আমিনুর ও সেকুল ইসলাম নামে এক যুবক প্রবেশ করেন। এ সময় ওই গৃহবধূর স্বামী ঘরের বাইরে ছিলেন। পরে আমিনুর ও সেকুল গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী ঘরে প্রবেশ করে এ দৃশ্য দেখে আমিনুরকে মারপিট করে ঘর থেকে বের করে দেন। এ ঘটনার পর ওই রাতেই গৃহবধূ এ বিষয়ে মদন থানায় একটি অভিযোগ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আমিনুরের লোকজন গৃহবধূর বাড়িতে হট্টগোল শুরু করে ও তাকে কটূক্তি করে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে গৃহবধূ ও তার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধে। পরে স্থানীয়রা তা থামিয়ে দেন। এর জের ধরে আবারো ওই দিন দুপুরে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যয়ে দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১৫ জনের মতো আহত হন। আহতদের মধ্যে সোহেল মিয়া, আনু মিয়া, নুর আলম, সেলিম মিয়া, লাখি আক্তার, সেকুল মিয়া, আমিনুর ইসলাম, ছলিমা আক্তার, শারমিন আক্তারসহ ১০ জনকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে সোহেল মিয়ার অবস্থা অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত নয়টার দিকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রমিজুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত সোহেল মিয়া মারা গেছেন। তার মৃতদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আটক পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’