নেত্রকোণায় চার কৃষি অঞ্চল বাড়বে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

বিশেষ প্রতিনিধি: অধিক ফসল উত্পাদনের লক্ষ্যে মাটির গুণাগুণ, ভূ-প্রকৃতি ও সার্বিক অবস্থানের ভিত্তিতে নেত্রকোণা জেলাকে চারটি কৃষি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। কৃষি পরিবেশ অঞ্চলের ৯,২১, ২২ এবং ২৯ নম্বর কৃষি অঞ্চলের অংশে নেত্রকোণা জেলার ১০টি উপজেলা পড়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে,নেত্রকোণাসহ দেশের ৬৪টি জেলাকে ভূ-প্রকৃতি বিবেচনায় ৩০টি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে (অ্যাগ্রো ইকোলজিক্যাল জোন)ভাগ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, নেত্রকোণা জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৯ হাজার ২২৪ হেক্টর। এই পরিমাণ জমিতেই আমন, আউশ, ইরি-বোরো এবং শাকসবজি আবাদ করা হয়। এই জমির মাঝারি উঁচু এবং সমতল ভূমিকে ৯ নম্বরে দেখানো হয়েছে, যেখানে ধান, শাকসবজির উৎপাদন বেশি হয়। হাওর, বাঁওড় অর্থাৎ ভাটি এলাকার নিম্নাঞ্চলকে ২১ নম্বরে দেখানো হয়েছে, যেখানে বোরো ধান বেশি উত্পন্ন হয়। হালকা পাহাড়ি এলাকাকে ২২ নম্বরে দেখানো হয়েছে পাহাড়ি অঞ্চল যেখানে শাকসবজি বেশি উৎপন্ন হয় এবং একেবারে পাহাড়ি এলাকাকে ২৯ নম্বরে দেখানো হয়েছে, যেখানে শুধু গাছপালা বা বনাঞ্চল রয়েছে।
নেত্রকোণার দশ উপজেলার মধ্যে ৯ নম্বরে পড়েছে নেত্রকোণা সদর, পূর্বধলা, বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া, কেন্দুয়া এবং মদনের কিছু অংশ। ২১ নম্বরে পড়েছে খালিয়াজুরী উপজেলা,মোহনগঞ্জ এবং মদন উপজেলা বেশির ভাগ এলাকা। ২২ নম্বরে পড়েছে কলমাকান্দা এবং দুর্গাপুর। ২৯ নম্বরে পড়েছে একেবারে নীল ভারতীয় সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর এবং কলমাকান্দার কিছু অংশ।
নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, প্রকৃতিভেদে দেশের ৬৪ জেলাকে কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে ভাগ করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মাটির গুণাগুণ বিচার করে যাতে নির্দিষ্ট শস্য আবাদ করা যায়। ফলে ভিন্ন ভিন্ন ফসল আবাদে জেলায় কৃষিতে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলে কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এতে করে কৃষকরা তাদের জমির মাটিভেদে ভিন্ন ভিন্ন জাতের ফসল আবাদ করতে পারছেন এবং এতে করে সুফলও পাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি পরিবেশ অঞ্চল নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ে মতবিনিময় বা কৃষি সমাবেশ করা উচিত। তা করা হলে কৃষকরা বেশি উপকৃত হবেন বলে তারা উল্লেখ করেন।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বলেন, কৃষিনির্ভর জেলা হিসেবে নেত্রকোণা জেলা বর্তমান শিল্পায়নের যুগে এখনো কৃষি থেকে সরতে পারছে না। কৃষিতে দেশের মধ্যে অন্যতম জেলা হিসেবে তাই ‘কৃষি পরিবেশ অঞ্চল’ হিসেবে নেত্রকোণা শস্য আবাদে দেশের মধ্যে অগ্রগণ্য। হাওরের মিঠা পানির কারণে যেমন এখানে সুস্বাদু মিঠা পানির মাছ পাওয়া যায়, তেমনি ইরি-বোরো ধান আবাদে সাফল্য এবং ফসল উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা নেত্রকোণা। এই সাফল্যকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।