
২৬ শে জুলাই ঐতিহাসিক নাজিরপুর দিবস। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিপুল উৎসাহ-উদ্দিপনা ও মর্যাদার মধ্যদিয়ে পালিত হয় এই ঐতিহাসিক দিবসটি। স্বাধীনতার সোনালী সূর্যটাকে ছিনিয়ে আনতে একাত্তরের ২৬ শে জুলাই জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে নেত্রকোণা ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে ৭ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিলেন। তাদের স্বরণে এই দিবসটি প্রতি বছর নেত্রকোণার মুক্তিকামী স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার লেংগুরাস্থ ৭ শহীদের কবর জিয়ারত সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানাধির মাধ্যমে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা প্রর্দশনের মধ্যদিয়ে পালন করেন এই ঐতিহাসিক দিবসটি।
একাত্তরের ২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সস্বস্ত্রযুদ্ধের মাধ্যমে নতুন জাতি হিসেবে বাঙ্গালী জাতির আত্ম প্রকাশে নেত্রকোণার স্বাধীনতাকামী জনগণ যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন, নাজিরপুর ও মদন এর ঐতিহাসিক সম্মুখযুদ্ধের গৌরব উজ্জল ভূমিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে নেত্রকোণার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। ৭১ এর ২৫ শে মার্চ এর কালো রাতে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের সুষিত-বঞ্চিত ও ক্ষুব্ধ জনগণ ন্যায় সংঘত ও প্রাপ্য অথিকারের প্রশ্নে দ্বীজাতিতথ্যের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তান নামক উপনিবেশিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা প্রিয় বাঙ্গালী জনগোষ্টী স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। নিঃসংকুচে ৯ মাস বিরামহীন রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের পর, পাকিস্তানের বাঙ্গালী অদ্যসীত পূর্ব-বাংলার জনগণ,বাংলাদেশ নামক একটি মানচিত্র আকঁতে সক্ষম হয়। দূর্নীবিত সাহসিকতার সাথে পরাজিত করে পাকিস্তানী হানাদার বাহীনিকে পরাজিত করে,ভৌগোলিক সীমারেখার সাথে নিজেদের করে পায় একটি লাল সবুজ পতাকা-আর এই পাওয়ার জন্যই ৪৫ বছর আগের সময়ের সাহসীর সন্তান হিসেবে নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ অঞ্চলের দামাল ছেলেরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে অংশ নেয়। ২৬ শে জুলাই দূর্গাপুর থেকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কলমাকান্দা যাওয়ার পথে নাজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের পচন্ড প্রতিরোধের সম্মুখিন হয়। হানাদার বাহিনীর অগ্রযাত্রা রুখে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। শুরু হয় তুমূল লড়াই। ময়মনসিংহের নাজমূল হক তারা’র নেতৃত্বে ‘তারা’ কম্পানী তিনটি প্লাটুন এই যুদ্ধে অংশ নেয়। নাজিরপুর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তারা কম্পানী’র কম্পানী কমান্ডার নাজমূল হক তারার সাথে এক আলাপচারিতায় কমান্ডার তারা বলেছিলেন ‘২৫ শে জুলাই বিকেলে ভারতের রংরা ক্যাম্পে আমার কম্পানী নিয়ে অবস্থান করছিলাম ঠিক তখনি ভারতের রংরা বিএসএফ ক্যাম্প অধিনায়ক ক্যাপ্টান চৌহান আমাকে তার বিএসএফ ক্যাম্পে ডেকে পাঠালেন। আমি ক্যাম্পে পৌছার পর ক্যান্টেন চৌহান আমাকে আমার কম্পানী থেকে ৩ প্লাটুন চৌকুস মুক্তিযোদ্ধা সহ পর্যাপ্ত গোলাবারুত নিয়ে ভোর রাত্রের মধ্যেই কলমাকান্দা-দূর্গাপুর রাস্তার নাজিরপুর এলাকায় স্থলপথ ও নৌপথ অবরোধ করার জন্য এ্যামবুষ নিয়ে অবস্থান করতে হবে। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি আমাকে বিএসএফ গোয়েন্দা বাহিনীর একটি রিপোর্ট দেখিয়ে বলেন, আগামীকাল ২৬ শে জুলাই সকালের দিকে দূর্গাপুর বিরিশিরি ক্যাম্প থেকে এক দল পাক আর্মি রসত নিয়ে নদী পথে কলমাকান্দা যাবে। এ ধরনের এক গোপন সংবাদ ক্যাটেন চৌহানের কাছে পৌছেছে। তাই,আমাকে ক্যাপ্টেন চৌহান নাজিরপুর এলাকার নৌপথ অবরোধ করে এ্যামবুষ পেতে হানাদার বাহিনীর উপর হামলা চালানোর যাবতীয় বিষয়ের দিক নির্দেশনা ও যুদ্ধ পরিকল্পনা সহ এক ব্রিফিং দিলেন। ক্যান্টেন চৌহানের ব্রিফিং ও পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি আমার কম্পানীর ৩ প্লাটুন চৌকুস যুদ্ধা নিয়ে ভোর রাত্রেই নাজিুরপুর তহসিল অফিস সংলগ্ন নদী ও রাস্তার দুই পার্শ্বের এ্যাবুষ নিয়ে অবস্থান নেই। সেই সাথে নাজিরপুর বাজারের পূর্ব পাশে গজারমারি এলাকায় অন্য একটি প্লাটুন এ্যামবুষ নেয়ার জন্য পাঠানো হয়। হানাদার বাহিনীর উপর ত্রি-মুখি আক্রমনের পরিকল্পনা নিয়ে ভোর রাত থেকে আমরা শত্রু বাহিনীর আগমনের প্রতিক্ষয় বসে রইলাম সময় গড়িয়ে যাচ্ছে কিন্তু শত্রু সৈন্যের কোন চিহ্ন আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম না। দেখতে দেখতে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে, তবুও শত্রু সৈন্যের কোন হদিস নেই। এমতাবস্থায় মুক্তিরা অধৈর্য্য হয়ে পড়ে। এ্যামবুষ ছেড়ে মুক্তিরা রাস্তায় উঠে আসে। শত্রু সৈন্য আগমনে বিএসএফ এর গোয়েন্দা রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে বিভিন্ন ধরণের আলোচনায় মেতে উঠে মুক্তিযোদ্ধারা। কেউ কেউ আবার পাশের নাজিরপুর বাজারে চা খেতে পা বাড়ায়। এমনি অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধারা যখন এলামেলো অবস্থায় ঘোরাফেরা করছে ঠিক তখনি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দূর্গাপুর থেকে ধান বুঝাই একটি নৌকা দিয়ে নদী পথে নাজিরপুর বাজারে চলে আসে এবং মুক্তিদের উপর অতর্কিত হামরা চালায়। নৌকা থেকেই হানাদার বাহিনী লাইট মেশিনগানের ব্রাশ ফায়ার দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমন চালায়। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমন চালায়,শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল আজিজ,নরুজ্জামান,জামাল উদ্দিন,এয়ার মাহমুদ,দিজেন্দ্র,ভবতোষ ও ফজলুল হক নামে ৭ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
কমান্ডার ‘তাঁরা’ আহত হয়ে রাস্তার পাশে পাট খেতে পড়ে যান। আহত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পাল্টা আক্রমণের কমান্ড দেন। মারাত্বক আহত অবস্থায় তিনি হামাগুড়ি দিয়ে পাশের ভবানীপুর ফজর মড়লের বাড়িতে আশ্রয় নেন। মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর হামলার মধ্যে নিজেদের অবস্থান তৈরী করে নিয়ে পাল্টা আক্রমন চালায়। এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশ এলাকার অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা এসে পাল্টা হামলায় শরিক হয়ে হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমনের তীব্রতা বৃদ্ধি করতে থাকে। খবর পেয়ে ভারতের রংরা ক্যাম্প এ অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত নাজিরপুর রনাঙ্গনে চলে আসেন। এবং পেছন থেকে মটার সেলিং এর মাধ্যমে কভারিং দিতে শুরু করে। শুরু হয় হানাদার বাহিনীর উপর চতুর মুখি পাল্টা আক্রমণ। দিনভর হামলা পাল্টা হামলায় বেশ কিছু শত্রু সৈন্য হতাহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর মুখি আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশে হারা হয়ে পিছু হটতে শুরু করে। পরবর্তীতে হেলিকাপ্টার গানশীপের সাহায্যে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়।
২৬ শে জুলাই নাজিরপুরে সংগঠিত ঐতিহাসিক যুদ্ধের পর দিন স্থানীয় গ্রামবাসি ও সহ যুদ্ধারা নিহত মুক্তিযুদ্ধাদের মরদেহ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী কলমাকান্দার লেংগুড়া ইউনিয়নের ১১৭২ নং সীমানা পিলারের নিকট ফুলবাড়ি নামকস্থানে সমাহিত করে। নাজিরপুর যুদ্ধে মারাত্বক আহত কমান্ডার তারাকে চিকিৎসার জন্য ভারতের কোনা হাসপাতালে নেয়া হলে কোম্পানীর টু-আই-সি(সেকেন্ড-ইন কমান্ড) নেত্রকোণার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, এটি ছিল নেত্রকোণা অঞ্চলের প্রথম ব্যাচের মুক্তিযোদ্ধা কম্পানী। যুদ্ধকালীন সময়ে এই তারা কম্পানী নেত্রকোণার বিভিন্ন অঞ্চলে দুধর্ষ যুদ্ধে আলোড়ন সৃষ্টি করে টাইগার কম্পানী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। এই কম্পানীতে নেত্রকোণার বীর মুক্তিযুদ্ধারা হলেন,ভারপ্রাপ্ত কম্পানী কমান্ডার আব্দুল জব্বার,প্লাটুন কমান্ডার আশরাফ আলী খান খসরু,আবু সিদ্দিক আহমেদ,শহীদ আব্দুল আজিজ,গোলাম মোস্তফা,আব্দুর রহিম,আয়ুব আলী,আবু আক্কাস আহমেদ,আবুল হাসেম,আবু হানিফ সরকার,পরেশ শীল ও শহীদ ফজলুল হক।
৯ ডিসেম্বর নেত্রকোণা শহর মুক্ত করতে এসে এই টাইগার কম্পানির তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু খাঁ,আব্দুর রশিদ,আব্দুস সাত্তার,কৃষি ফার্ম এর সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। ৯ ডিসেম্বর এই যুদ্ধে নেত্রকোণা শহর হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ২৬ শে জুলাই নাজিরপুরে সংগঠিত ঐতিহাসিক যুদ্ধে নিহত শহীদদের স্বরণে এই দিবসটি প্রতিবছর নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেন। নাজিরপুর বাজারের পাশে তহসীল অফিসের সামনে যুদ্ধ ক্ষেত্র সংলগ্ন রাস্তার পাশে ১৯৮৮ সালে এই শহীদ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে প্রতিবছর ২৬ শে জুলাই মুক্তিযেদ্ধা সহ এলাকাবাসী শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এ ছাড়া লেঙ্গুরা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়ায় সাত শহীদের কবর ও সমাধি স্থলে প্রতি বছর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ এসে শ্রদ্ধা সহ পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শহীদের স্বরণে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান পালন করেন। যদিও আজ পর্যন্ত ৭ শহীদের কবর ও সমাধীস্থলে দেখার মত কোন স্মৃতি সৌধ গড়ে উঠেনি। এলাকাবসী সহ মুক্তিকামী জনগণের দাবী এই ঐতিহাসিক ৭ শহীদের মাজারে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ সহ একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করে দেশি বিদেশি পর্যটকসহ আগামী প্রজম্মের কাছে স্বাধীনতার বীর যুদ্ধাদের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের কাছে দেশ প্রেমিক জনগণের প্রত্যাশা।
দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ি সস্বস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আনন্দ বেদনা মিশ্রিত স্বাধীনতার ইতিহাস খুবি গৌরবের পাশাপাশি সহায় সম্পদ ও স্বজন হারানো বেদনা ও ভারাক্রান্ত। অনেক কষ্ট আর আত্ম ত্যাগের মধ্য দিয়ে ধর্মে লেবাস ধারী বরবর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অসীম সাহসের সাথে এদেশের মানুষকে লড়তে হয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্য এদেশের মানুষকে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। শেখ মুজিবকে ১৪ বছর জেলে থাকতে হয়েছে, শের-ই বাংলা সোহরোওারদ্দী,ভাসানীর মতো জন নন্দিত নেতাদের কে জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সইতে হয়েছে। ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মহুতি দু-লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আজ সস্বস্ত্র জঙ্গিবাদ মৌলবাদ,সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্পের কালো ছায়া বাংলাদেশকে গ্রাস করতে উদ্যত। আর এই জঙ্গিবাদের বিষাক্ত ছোবলে জাতী আজ চরম হুমকির সম্মুখিন। তাই সঙ্গত কারনেই আজ ১৬ কোটি বাঙ্গালীর সামনে দেখা দিয়েছে যুগের নতুন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে বাঙ্গালী জাতি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে,এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা ছাড়া আমাদের কোন বিকল্প নেই। উপায় নেই সত্যকে মেনে নেয়া ছাড়া। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এসেও বাঙ্গালী জাতিকে জঙ্গিবাদ মৌলবাদ সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার অপরাজনীতির কালো ছায়া বাংলার মুক্তিকামী মানুষের ভাগ্যকাশ ঢেকে দেবে এটা কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র কাঠামো বাংলাদেশের জনগণ গড়ে তুলেছিল যে রাষ্ট্র কাঠামো মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র,ধর্ম নিরপেক্ষতা ,অসম্প্রাদায়িক বাংলাদেশ গড়া সহ সামাজিক ন্যায় বিচার মানবিক মর্যাদা ও সাম্যবাদের বিরুদ্ধে সস্বস্ত্র জঙ্গি তৎপরতার রক্তাক্ত চ্যালেঞ্জকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা জাতি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ করেই এর মোকাবেলা করবে।তার জন্য চাই একাত্তরের সেই চেতনা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যে চেতনা নিয়ে আমরা বাঙ্গালী জাতি একাত্তর সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি,সেই একই ভাবে আমাদের কে দলমত নির্বিশেষে স্ব্ধাীনতার পক্ষের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন পেশাজীতি শক্তি গুলোর সমন্বিত জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলে জাতীর এই অশুভ ক্রান্তিকাল অতিক্রিম করতে হবে। আর এই অশুভ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে হলে একাত্তর পরর্বতী প্রজন্মকেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে আরেকটি একাত্তর সৃষ্টি করে হলেও দেশী বিদেশী স্বরযন্ত্র আর এই বিষাক্ত অপরাজনীতির বিষদাঁত ভেঙ্গ দিয়ে সুখি, সমিৃদ্ধশালীও আত্ম মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার শপথ নিতে হবে।-হায়দার জাহান চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক