মদনে টাকা না দেয়ায় বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড মেলেনি লক্ষুর !

সৌমিন খেলন,মদন থেকে ফিরে: বয়সের ভারে নুয়ে পড়া কবিয়াল মদন সরকারকে নিয়ে কবি মাহবুব কবির তার কবিতায় লিখেছিলেন- ‘মদন সরকার কুঁজো হতে হতে চাকা হয়ে গেছেন। এখন তিনি কারো মুখ দেখতে পান না-শুধু পা দেখেন আর মাটি দেখেন, মাটিকে দিগন্ত ভেবে ভ্রম করেন।’

কবির কবিতার সেই পংক্তিগুলোই বাস্তবতায় আবারও জানান দিলেন নেত্রকোণার মদন উপজেলার কাইটাল ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ভিক্ষা করে জীবনধারণ করা মোসাম্মাৎ লক্ষু। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী লক্ষুর বয়স নব্বই বছর।

সমাজের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালানো এই বয়োবৃদ্ধাও কুঁজো হয়ে চাকা হয়ে গেছেন। তিনিও এখন আর আকাশ দেখতে পান না! শুধু পা দেখেন আর মাটি দেখেন।

কিন্তু নির্মম সত্য সরকার থেকে দরিদ্র অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য চালু করা সহযোগিতার বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড কোনোটাই লক্ষুর ভাগ্যে জোটেনি।

লক্ষুর ভাষ্য অনুযায়ী স্থানীয় জনপ্রতিনিধির চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় তাকে সরকারের কোনো সহযোগিতাই পেতে সাহায্য করা হয়নি। বরং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সন্তোষ বারবার লক্ষুর কাছে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের বিনিময়ে সাত হাজার টাকা দাবি করে আসছেন। ইউপি চেয়ারম্যানও কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে জানান লক্ষু।

গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া, রহিমা বেগম, কলি আক্তার বলেন, জনসেবায় সরকারের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য টাকা আদায় বা দাবি করা জনপ্রতিনিধিরা সেই চক্রের সদস্য। এদের আইনের আওতায় আনা দরকার।

বয়োবৃদ্ধা লক্ষুস্থানীয় এই বাসিন্দারা জানান, লক্ষুর একটি ছেলে রয়েছে কিন্তু তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। বাবার রেখে যাওয়া জমি-জমা ফুসলিয়ে আর প্রতারণা করে অন্যরা নিয়ে যাওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। লক্ষু খাগুরিয়া গ্রামের মৃত কালাচাঁনের স্ত্রী।

 

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।