প্রকৌশলীকে মারধরের মামলায় বারহাট্টা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত

বিশেষ প্রতিনিধি: সরকারি কাজে বাধা, মারধোর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয় চলতি বছরের পাঁচ মে ।
ওই সময় নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাকিরুল ইসলাম বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় মামলাটি করেন।
কাজী সাখাওয়াত হোসেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বারহাট্টা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি টানা দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও সওজ কাযালয় সূত্রে জানা গেছে, চার মে সকালে নেত্রকোণা- মোহনগঞ্জ সড়কের বারহাট্টা বড়ি এলাকা থেকে মোহনগঞ্জ পযন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়। দি রিলাইবল বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকারদারি প্রতিষ্ঠান ওই পায়। কাজের দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা জেলা সওজের্ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাকিরুল ইসলাম ওই দিন বেলা ১১টার দিকে বড়ি এলাকায় কাজ দেখতে যান। এর কিছুক্ষণ পর বারহাট্টা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন ওই স্থানে যান। এ সময় তিনি কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। একই সঙ্গে তিনি সওজের বিভাগীয় প্রকৌশলীকে বলেন,সড়ক সংস্কারের কাজ করার আগে আমার এলাকায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে হবে। সাকিরুল ইসলাম সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তাঁর উধ্বর্তন কর্মকর্তা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম তরফদারকে জানান। ওই কর্মকর্তা তখন সংস্কার কাজে ব্যবহৃত পাথরসহ বিভিন্ন উপাদানের ছবি মুঠোফোনে সংগ্রহ করে তাঁর নিকট পাঠাতে বলেন। সাকিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘মুঠোফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সময় চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রাব্য-অশ্রাব্য, কথ্য-অকথ্য্ ভাষা প্রয়োগ করতে থাকেন। এক পযায়ে তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা তিনজন লোক আমার ওপর হামলা চালিয়ে মারধোর করেন এবং একই সঙ্গে অনৈতিকভাবে চাঁদা দাবি করেন। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।’
এ দিকে, ওই ঘটনায় সাকিরুল ইসলাম বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় ওই দিন রাত নয়টার দিকে সরকারি কাজে বাধা, মারধোর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান গাঁ ঢাকা দিয়ে হাইকোর্ট থেকে আটাশ দিনের জন্য জামিনে থাকেন। জামিন শেষে আজ মঙ্গলবার নেত্রকোণা আদালতে হাজির হলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।।
নেত্রকোণার কোর্ট ইন্সপেক্টর গোলক চন্দ্র বসাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে তাঁর মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ রয়েছে। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এর আগে গত ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বারহাট্টা উপজেলার তখনকার নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ও তাঁকে বহনকারী সরকারি গাড়িটি পেট্রলবোমা মেরে পুড়িয়ে ফেলার হমকি দেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে আসামি করে ইউএনওর গাড়িচালক মো. আবদুল খালেক বাদী হয়ে ওই রাতেই থানায় মামলা করেন। অবশ্য ওই ঘটনায় চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছিল।

 

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।