নেত্রকোণার সড়ক সংস্কারে ২ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ

বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণা জেলার হাওর উপজেলাগুলোসহ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন উপজেলা সড়ক, সীমান্ত সড়ক, হাওর সড়ক ও সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। আবার নতুন সড়ক নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নেত্রকোণার সবচেয়ে প্রত্যন্ত হাওর উপজেলা মদন,খালিয়াজুরী ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ডুবন্ত সড়ক। ডুবন্ত সড়ক শুষ্ক মৌসুমে জনসাধারণ হাওর এলাকায় তাদের বাড়ি-ঘরে যেতে সবচেয়ে সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়া অন্য উপজেলাতেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের কাজ করছে। এ জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ২ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হাওর উপজেলা মদন উপজেলা থেকে খালিয়াজুরী উপজেলা পর্যন্ত ডুবন্ত সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এই সড়কটি বর্ষাকালে হাওরের পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় থাকবে। বর্ষার পরপরই আবার তা ভেসে উঠবে এবং লোকজন চলাচল করতে পারবেন। মাইক্রোবাস এবং ছোট-বড় যন্ত্রচালিত যানবাহনও চলাচল করতে পারবে।
মোহনগঞ্জ উপজেলাতেও চলছে ডুবন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ। কয়েকটি সড়কের কাজ চলমান এবং দুইটি সড়ক নতুন করে নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
খালিয়াজুরি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কিবরিয়া জব্বার এবং মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদ ইকবাল বলেন, শুষ্ক মৌসুমে হাওরে যাতায়াতের জন্য ডুবন্ত সড়ক নির্মাণ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মাইলফলক। লোকজনের কষ্ট অনেক কমে গেছে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমেই কষ্ট হতো চলাচলে। তাই ডুবন্ত সড়ক যখন ভেসে উঠে তখন হাওরের মানুষের আনন্দের আর সীমা থাকে না।
নেত্রকোণা জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে নেত্রকোণার বহুল আলোচিত বাইপাস রোড বা লিংক রোড নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এরজন্য ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া নেত্রকোণা-কেন্দুয়া সড়ক নির্মাণের জন্য ৪৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া সবচেয়ে জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেত্রকোণার শ্যামগঞ্জ বাজার থেকে পাহাড়ি উপজেলা দুর্গাপুর পৌর এলাকা পর্যন্ত হাইওয়ে সড়ক নির্মাণের কাজ শেষের পথে। এরজন্য ব্যয় করা হচ্ছে ৩১৬ কোটি টাকা। এই সড়কটির নির্মাণ সম্পূর্ণ শেষ হলে পর্যটন এলাকা দুর্গাপুরে যাতায়াতের বিশেষ সুবিধা হবে।
অপরদিকে হাওর উপজেলা মদন থেকে অপর হাওর উপজেলা খালিয়াজুরী পর্যন্ত ডুবন্ত সড়ক ও সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এই সড়ক ও সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৩ কোটি টাকা। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সঙ্গে নেত্রকোণার সীমান্ত সড়ক বা বর্ডার সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। এজন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ২৮২ কোটি টাকা। নেত্রকোণার সঙ্গে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা (ভায়া নেত্রকোণার বিশিউড়া) সড়ক যোগাযোগের জন্য সড়ক নির্মাণে ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নে নেত্রকোণা ময়মনসিংহ সড়ক সংস্কার কাজ চলছে। এজন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ১০৭ কোটি টাকা। নেত্রকোণা কলমাকান্দা উপজেলা সড়ক নির্মাণের জন্য ৩১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নেত্রকোণা পূর্বধলা সড়ক নতুন করে নির্মাণের জন্য ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নেত্রকোণা বিরিশিরি সড়ক উন্নয়নের জন্য ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
নেত্রকোণা জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার এই প্রতিনিধিকে বলেন, উল্লিখিত কাজগুলো শেষ হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে। এর ফলে সড়ক পথে নেত্রকোণার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
নেত্রকোণা-২ আসনের এমপি মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, হাওর জেলা হিসেবে পরিচিত নেত্রকোণার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ করেছে। কাজের মান ঠিক রাখার জন্য তিনি ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানান।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।