মোহনগঞ্জের আদর্শ নগর গ্রামই হচ্ছে শহর

ইন্দ্র সরকার, মোহনগঞ্জ থেকে : আদর্শনগর। হাওর পাড়ের উপজেলা মোহনগঞ্জে সুয়াইর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। তবে, এই গ্রামটি কুলপতাক মৌজায় অবস্থিত। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল, ‘গ্রাম হবে শহর’। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের কাজ শুরু করেছেন তারই কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। তার সূদূর প্রবাসী উদ্যোগে ও নানা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে গ্রাম হয়ে উঠছে শহর। এ আদর্শনগর গ্রামে উন্নয়ন পরিবর্তনের ছোঁয়ায় কলেজ, ব্যাংক, পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, ব্রীজ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, ট্যুরিজম পর্যন্ত গড়ে তুলেছেন। অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এছাড়া চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে এ গ্রাম পৌঁছে যাবে অনন্য উচ্চতায়। এসব প্রকল্প তিনি নিজেই দেখভাল করেন। এ উন্নয়নের স্বপ্নদর্শী উদ্যোক্তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। গ্রাম থেকে শহরে রূপ লাভ করা আদর্শনগর সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করেন সরকারের পরিকল্পনা মস্ত্রী আবদুল মান্নান। এসময় সেখানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত গ্রাম হবে শহর সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন। তার গড়া এ কলেজটিতে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক। এখন তাদের কলেজ পড়তে ১৫ কিলোমিটার দূরে মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরে আসতে হচ্ছে না। ওই গ্রামের সুয়াইর ইউনিয়নে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি হাই স্কুল ও ৩টি মাদ্রাসা রয়েছে। শুধু শিক্ষা খাতে পরিবর্তন নয়,ওই ইউনিয়নের কৃষকদের কৃষি ঋণ, ব্যাংক একাউন্ট খোলাসহ নানাবিধ কাজে মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরে আসতে হতো। ওই আদর্শনগর গ্রামে কৃষি ব্যাংকের শাখা খোলা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের কৃষিজীবিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। গ্রামের মানুষের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। কৃষক, ব্যবসায়ী কিংবা দিনমজুর সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা। আছে ফ্রিজ, টেলিভিশন। কমিউনিটি ক্লিনিকে পাচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। গত ২ বছরে ওই ইউনিয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন এসেছে। সার্বমার্জেবল সড়ক ও কার্পোটিং সড়ক নির্মাণ হয়েছে ১৩ কিলোমিটার। প্রায় ১০০ ফুটের ব্রীজ করা হয়েছে ৩টি। গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক-যোগাযোগ উন্নত করায় সামগ্রিক অবস্থার উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে। ওই গ্রামে উদ্বোধন করা হয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। ওই গ্রামকে ঘিরে হাওর পাড়ে আদর্শনগর পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, ৩ একর জায়গায় মাটি ভরাটের কাজে ১০০ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গ্রাম থেকে শহর উন্নীত হওয়ায় আনন্দিত কলেজ শিক্ষক খায়রুজ্জামান মনি। তিনি বলেন, এখন আর এখানে অজ পাড়া গাঁ নেই। শহরের প্রায় সব সুবিধাই বিদ্যমান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, বদলে যাওয়া আদর্শনগর সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপের ফসল। উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শহীদ ইকবাল বলেন, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদূর প্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপই আদর্শনগর এখন শহর হলো। যা আমাদের মডেল।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।