একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড চান মদনের খুদ বানু

ফয়েজ আহম্মদ হৃদয়, মদন থেকে: নেত্রকোণার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের শিবাশ্রম গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের স্ত্রী নিঃস্ব খুদ বানু। প্রতিবেশিদের দাবী তার বয়স প্রায় ১২০ বছর। ৫০ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন। আপন জন বলতে তার কেউ নেই। দেখা-শোনাও কেহ করে না। বয়সের ভারে অনেক আগেই কর্মশক্তি হারালেও পেটের ক্ষুধা মেটাতে মানুষের ঘরে ঘরে হাত পেতে চলতে হয়। রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লে তার দূরগতির শেষ নেই। খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকলে এলাকাবাসী তার প্রতি সহানুভতির হাত বাড়িয়ে মাথা গুজার জন্য তাকে একটি ছোট ছাপড়া ঘর তৈরি করে দেয়। সেখানেই তার বসবাস। এ পর্যন্ত তার কপালে বয়স্ক ভাতাসহ সরকারি কোন সাহায্য জুটেনি।
বৃদ্ধ খুদ বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কিছুই বলতে পারেন না। শুধু মাথা নাড়িয়ে ইশারা ইঙ্গিত করেন। যা কিছুই বুঝা যায়নি। ‘
বৃদ্ধার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দশ জনের সাহায্যে ভাঙা একটি টিনের ছাপড়ায় তার বসবাস। ঘরে আসবাবপত্র বলতে একটি চৌকি। আর কিছু নেই। ঘরের মেঝেতে গজিয়েছে বিভিন্ন ধরনের আগাছা। বসবাসের অযোগ্য ঘরেই থাকেন বৃদ্ধা খুদ বানু।
পাশের ঘরের ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা জমিলা আক্তার জানান,আমার বয়স যখন ৭ বছর তখন আমার মায়ের নিকট শুনেছি তার বয়স ৫৫। তাদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল । কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ভিক্ষা করে জীবন যাপন ও খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে থাকেন। তার আপনজন বলতে কেউ না থাকায় এলাকাবাসী তার বসবাসের জন্য এ ঘরটি তৈরি করে দিয়েছেন। তবে এ পর্যন্ত সরকারি কোন সাহায্য তার ভাগ্যে জুটেনি।
একই গ্রামের ৭০ বছর বয়সী আব্দুল কাদের জানান, আমি ছোট বেলা থেকেই উনাকে এমন দেখে আসতেছি। উনার কেউ নাই। উনাকে সরকারি কোন সাহায্য দিলে হয়তো মৃত্যুর আগে মনের শান্তি পাইত।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ রয়েল জানান,আমি শিবাশ্রম গ্রামের শতাধিক বয়সের নিঃস্ব খুদ বানুকে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিবেশীরা এই কার্ডের টাকা অন্য লোকজন নিয়ে যাবে বললে আমি তাকে কার্ড দেইনি। তবে মাঝে মধ্যে উনার জন্য আমার ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে সাহায্য করে থাকি।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, বয়স্ক ভাতার কার্ড এমন বয়সেও পায়নি তা আমার জানা ছিল না। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান উক্ত খুদ বানুর প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন,আমি গত ৬ মে দায়িত্ব পেয়েছি। এর আগেই সকল কার্ড বন্টন হয়ে গেছে। তবুও চেষ্টা করব এই বৃদ্ধ মহিলার জন্য একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড জরুরী ভিত্তিতে করে দেয়ার জন্য।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।