গফরগাঁওয়ে হত্যার অভিযোগে দুই এসআইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দেলোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ: অপরাধীকে বাঁচাতে নিরপরাধ একজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের এক ইউপি মেম্বার ও থানা দুই পুলিশের বিরুদ্ধে। মামলাটি করেছেন নিহত লিটনের মা।

গফরগাও পাকাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেন স্ত্রী হেনা আক্তার। এই মামলার কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা পেয়ে ২৩ এপ্রিল অভিযান চালায় গফরগাও থানা পুলিশ। এই সময় পাকাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের বাড়ীতে না গিয়ে লিটনের বাড়ী ঘেরাও করে, ঘর থেকে বের কের পরিবারের অভিযোগ পুলিশ  নির্যাতন আহত হয় লিটন। পরে হাসপাতালে নিয়ে কামরুজ্জামান নাম উল্লেখ করে সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বলে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করান পুলিশ ।

এদিকে পুলিশ বলছে, পালানোর সময়  ঘরের চাল থেকে পড়ে যায় লিটন । একপর্যায়ে তাকে আচেতন অবস্থায় প্রথমে গফরগাও হাসপাতালে পরে ময়মনসিংহ মেডিকেলে র্ভতি করান।

লিটন মিয়র পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক মামলায় কামরুজ্জামান নামে এক সৌদি প্রবাসীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হলেও, তার জায়গায় লিটন মিয়াকে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায় পুলিশ। এতে ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় তার।

অভিযানের শুরু থেকেই লিটনকে কামরুজ্জামান সাজানোর চেষ্টা চালায় পুলিশ,হাসপাতালে ভর্তির সময় রেজিষ্ট্রারে রোগী হিসেবে লিটনের নাম লেখা হয়েছে কামরুজ্জামান। আহতের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় সড়ক দুর্ঘটনা। ১৫ দিন অজ্ঞান থাকার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন তাকে। শুধু হাসপাতালে ভর্তি নয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিটন মিয়াকে কামরুজ্জামান উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদনও দেয় পুলিশ।  খোদ মামলার বাদিই বলছেন, নিহত লিটন কামরুজ্জামান নয়। কামরুজ্জামানের বাবাও জানিয়েছেন, তার ছেলে আছে, সৌদিআরবে।

লিটনকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে গফরগাও আমলী আদালতে মামলা করেছে পরিবার। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হত্যায় জড়িত স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান হিরো ও গফরগাঁও থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য নাম উল্লেখ করেন। স্বজনদের অভিযোগ, আসল আসামিকে বাঁচাতেই বলির পাঠা বানানো হয়েছে লিটন মিয়াকে।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ইউপি মেম্বার, গফরগাও থানার দুই এসআইসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছে নিহেতর মা। আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন (পিবিআইকে)। এই ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা পুলিশ। ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার জানান তদন্তে দোষ প্রমান হলে নেয়া হবে কঠোর ব্যাবস্থা।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।