
মদন প্রতিনিধি: নেত্রকোণার মদন উপজেলার হাওরাঞ্চলে ব্রি ধান-২৮ কাটা শুরু হয়েছে। অধিকাংশ জমির আধাপাকা ধান চিটা হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন খুবই কম। আবার অনেকেই এক মুষ্টি ধান ঘরে তুলতে পারবে না বলে জানাযায়। যেখানে প্রতি একরে ৭০/৮০ মন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা সেখানে কৃষক পাচ্ছে ১৫/২০ মন ধান। ফসলি মাঠ জুড়ে কৃষকদের মাঝে শুরু হয়েছে হাহাকার। এক ফসলি এই এলাকার কৃষকগণ ব্রি ধান-২৮ চাষের উপর নির্ভরশীল। এ বছর বর্ষার পানি আগাম সরে যাওয়ায় কৃষক আগাম এ ধান রোপন করেন। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ঠান্ডা জনিত কারণে ফসলের এ ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকদের ধারণা। সারা বছর কি খাবে? কি দিয়ে হবে সন্তানদের বরণ-পোষণ এ রকম দুশ্চিন্তার অন্ত নেই কৃষক পরিবারে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এ বছর উপজেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৭হাজার২শ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান-২৮ রোপন করা হয়।
রোববার সরজমিনে তলার হাওর ও উচিতপুর হাওরে গেলে দেখা যায় অধিকাংশ জমির ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা ও কালো হয়ে গেছে। আবার অনেক জমিতে ধান পুষ্ট না হয়ে চিটা হয়ে গেছে। ফলে এ সব ধান সংগ্রহ করার ব্যায়ভার বহন করতে পারবে না বলে অনেক কৃষক জানান।
উচিতপুর কয়ার হাওরের কৃষক রুবেল, আব্দুর রশিদ, কাশেম, সামছুল আলম ভূইয়া ও তলার হাওরের কৃষক ফতেপুর গ্রামের হারেছ তালুকদার,মন্নাফ, বালালী গ্রামের রোকন, বাঘমারা গ্রামের আনার মিয়া ,লুহিট মিয়া, মৌলা মিয়া জানান, এবার বর্ষার পানি আগাম সরে যাওয়ায় আগাম বন্যার ভয়ে অন্যান্য বছরের চেয়ে জমিতে ধান আগাম রোপন করেছিলাম। কিন্তু ঠান্ডা জনিত কারণে ধান পুষ্ট না হয়ে শীষ সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে। আমাদের বেশীর ভাগ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে আবার আমরা যে সব জমিতে প্রতি একরে ৭০/৮০ মন ধান পাই সেখানে এবার ১৫/২০ মন ধান পাওয়া যাচ্ছে। এতে ধান কাটা-মাড়াই ব্যায় ভারেই সব চলে যাচ্ছে। এ বছর আমাদের খুব কষ্টে দিন যাবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী জানান, বর্ষার পানি আগে নেমে যাওযায় আগাম বীজতলা ও জমি রোপন করায় এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বছরের শুরু থেকেই কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ পরামর্শ দিয়ে আসছি। এ বছর ব্রি ধান-২৮ নিয়ে কৃষকগণ সমস্যায় পড়েছে। আমরা পৌরসভাসহ উপজেরার ৮ ইউনিয়ন সার্ভে করে ১ হাজার ২শ হেক্টর জমি ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করেছি।
এ ব্যপারে মদন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম রাসূল জানান, এ বছর ঠান্ডা জনিত কারণে কৃষকদের এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে লোকজন এসে ফসলি জমিতে কোল্ড ইনজুরি ছাড়া অন্য কোনো রোগবালাই নেই বলে জানান। তবে এ বছর কৃষকদের খুব র্দূদিন। এ ব্যাপরে কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।