শি ল্প ক থা : প্রসঙ্গ: একটি প্রবন্ধ অথবা নিবন্ধ – দীপক সরকার

ক.
‘উকিলমুন্সিঃ প্রামাণ্য পাঠের সন্ধানে’ নামক সংকলনে প্রকাশিত বরণ্যে শিক্ষাবিদ যতীন সরকারের একটি সাক্ষাৎকার, যা আমি গ্রহণ করেছিলাম; চোখ নামক কাগজের সম্পাদকীয় ডেস্কে সাক্ষাতকারটির একটি কপি পৌঁছল। লেখাটি দ্বিতীয় সংখ্যায় প্রকাশ হবে এমন কথা বলে, আমার নিজের একটি প্রবন্ধ/নিবন্ধ কাগজটির সূচনা সংখ্যার জন্য চোখ নামক কাগজটির কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশা করলো।
আমি অসুস্থ। প্রণম্য কবি নির্মলেন্দু গুণ ক্ষুদে বার্তায় বললেন, ‘এখন তোমার কোন চিন্তাও নেই, দুশ্চিন্তাও নেই; কিছুদিন ঘুমাও’। কিছু তাতে কি হয়? চিন্তা শুরু হলো, প্রকৃষ্ট বন্ধন ও সংশ্লিষ্টতা পরম্পরায় লেখা, অর্থাৎ প্রবন্ধ লিখবো, নাকি নির্দিষ্ট বন্ধন (Restrction) নিয়মযুক্ত যে লেখা, অর্থাৎ নিবন্ধ লিখবো?
যদি লিখি, শুরুটা কিভাবে হবে? পাঠ উপলব্ধির কোন বিষয় দিয়ে পরম্পরা টানবো নাকি বিস্ময়াভিভূত কোন ঘটনা দিয়ে শুরু করবো? তখন মনে পড়লো যতীন সরকারের ‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন’ নামক অসাধারণ গ্রন্থে উল্লেখিত একটি ঘটনার কথা। একবার তিনি অনেক লোকের ভীড় দেখে গ্রামের অতি সাধারণ, অনক্ষর একজন মানুষকে ভীড়ের কারণ জিজ্ঞেস করলে ওই মানুষটি জানালেন, পুকুরে মাছ ধরা হচ্ছে। যতীন সরকার অবাক হয়ে বললেন, এতো লোক এই ছোট্ট পুকুরে মাছ ধরছে? গ্রামের মানুষটি হেসে বললেন, না। যারা মাছ ধরছে তাদের চেয়ে দার্শনিকের সংখ্যা অনেক বেশি অর্থাৎ যারা মাছ ধরা দেখছে তারা সবই দার্শনিক। ইংরেজি Philosophy শব্দটি জ্ঞান অনে¦ষণ বোধক গ্রীক শব্দে থেকে উৎপন্ন, একথা তিনি খুব ভালোভাবে জেনেও ঐদিন গ্রামের মানুষটির কথা যতীন সরকারের মনে ধরে গিয়েছিলো। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, দর্শন শব্দের অর্থ যখন দেখা, তাহলে আমরা তো সবাই দেখছি, আমরা সবাই দার্শনিক। সেজন্য তিনি বলেছেন, বাস্তবে দর্শন না করে (না দেখে) কোন প্রকার জ্ঞান অন্বেষণই সম্ভব নয় এবং দর্শন বলতে তিনি একই সঙ্গে সাধারণ দেখা ও ফিলোসফিকেও বুঝেন এবং দার্শনিক বলতে তাঁর কাছে ফিলসফার যেমন মান্য তেমনি দর্শন শব্দটির প্রতিশব্দরূপেও দার্শনিক শব্দটির ব্যবহার অগ্রাহ্য করেন না।
পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন গ্রন্থে প্রথম যখন কথাগুলো পড়ছিলাম, তখন ঠিক করেছিলাম প্রবন্ধ/নিবন্ধ লিখলে এমন প্রান্তিকজনদের চিন্তা প্রসূত কথামালাকে উদ্ধৃত করে নিজস্ব ব্যঞ্জনায় লিখবো। বিদ্বান মহলের শব্দ মালা থেকে কিছুটা দূরে থাকবো, কিন্তু আজ তো তা পারছি না। কারণ ছাত্র জীবনে বিদ্যার পিছনে না দৌড়ে, দৌড়েছি নম্বর প্রাপ্তির পিছনে। প্রকৃত বিদ্যা মননে থাকলে তো বিদ্যানমহলের শব্দমালা থেকে দূরে থাকা যায়, আবার সরল সারস্বত কথায়ও লিখা যায়।
যাহোক, এখন শৈশবে এক অমলিন চিত্রশিল্প নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে। The storm নামক চিত্রশিল্পটির শিল্পী ফ্রান্সের Pieoore August Cot. শিল্প ও শিল্পীর শৈলীর গভীরতা উন্মোচন, যাপিত জীবন নিয়ে লিখতে হঠাৎ বিস্মিত হলাম। না বুঝেই জীবন পাড়ি দেয়া যাকে বলে এখানো বোধ হয় তা ঘটছে, অর্থাৎ আমি কি জানি যথার্থ শিল্প কী? না জানলে লেখার সঞ্চারিত পথ কতটুকু? মনে পড়লো কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় অনূদিত, তুরস্কের কবি নাজিম হিকমত বলেছিলেন, ‘সেই শিল্পই খাঁটি শিল্প, যার দর্পণে জীবন প্রতিফলিত, তার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে একটি মানুষের সবকটি দিক। এবং সেই খাঁটি শিল্প কখনো জীবন সম্পর্কে মানুষকে মিথ্যা ধারণা দেয় না।
নাজিম হিকমতের একথা মান্য করে সিদ্ধান্ত নিলাম, সরল বয়ানে যেহেতু শিল্প ও শিল্পীর জীবনবোধ লিখতে আমি অক্ষম সুতরাং শুধু কিছু তথ্য দিয়ে এ বিষয়টি সাজানো ঠিক হবে না। কারণ ফার্সি কবি জালালুদ্দিন রুমি তাঁর কবিতায় বলেছেন, হও অনুগত ঘোড়া/ যাতে কেউ সহজেই চড়তে পারে তোমার উপর/…স্বার্থপর মানুষই শুধু চায়, তার ভার কেউ বহন করুক/.. উঁচু আসন খোঁজো না, যার ভার অন্যের কাঁধের উপর বরং দারিদ্রকেই আলিঙ্গন করো।
আমিও রূপরস, গন্ধে লেখাটি রুচিজহ্রদ্ধ করতে না পেরে আপাতত থেমে গেলাম। কারণ, জীবনে চলার’চে থামতে জানা জরুরি অনেক।
খ.
এবার কবিতা, কবিতার দশক বিচার এবং জীবনের তাৎপর্য শিরোনামে একটি লিখা নিজের দর্শন ও বোধের অতলে ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করার জন্য জন্য তৈরি হলাম। নোবেলজয়ী সুয়েতলানা আলোক্সিয়েভিচ খুব যতœকরে বলেছিলেন, জীবন অনেক বেশি মূল্যবান। কবিতার সাথে কবিতার দশক এবং দুটোর সঙ্গে জীবনের রয়েছে ঘনিষ্ঠ বন্ধন। সুতরাং প্রসঙ্গটি আমাকে প্রবন্ধ/নিবন্ধ লেখার বাসনাকে অনেকটা উদ্দীপ্ত করলো। কারণ কবিতা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কথা আমার পড়াছিলো, তিনি বলেছেন, ‘নিজের প্রাণের মোধ্যে,পরের প্রাণের মোধ্যে এবং প্রকৃতির প্রাণের মোধ্য প্রবেশ করার ক্ষমতাই কবিত্ব’। চলতি সময়ে কথাগুলোর সাথে কেউ কেউ একমত না হলেও অর্থাৎ মোটামুটি এটুকু একমত যে, প্রজ্ঞা শাসিত আবেগই কবিতা। কবি শামসুর রাহমান তো বলেই গেছেন, কবিতা এক ধরনের আশ্রয়। তাই অপ্রকৃত কৃষকের হাতে যেমন অপুষ্ট শস্য ফলে, তেমনি কবিতা বিষয়ে কিছু পঙ্ক্তি ফলাতে পারলেও দশক বিবেচনায় নিয়ে হঠাৎ দাড়িয়ে থেমে গেলাম কবি আবু হাসান শাহরিয়ারের কথা শুনে। তিনি যখন বলেন, দশক আবার কি? চিন্তার তারুণ্যই আসল, উচ্চতা মাথায় নয়, প্রজ্ঞায়, যোগ্যতাও বয়সে নয়, গুণে। এবং দশক বিচারের নিরব ষড়যন্ত্রকে (Conspiracy of Silence) এক ধরনের ব্যাধি বলেছেন।
এ বিষয়ে আমারও শীতল পাটির মতো সরল উপলব্ধি, কবিতা কালে কালে মানুষের জীবন প্রবাহে নিবিড় প্রবাহে জড়িত। এবং উপলব্ধির নিবিড়তাই কবিতার অন্তর্গত শক্তিকে কালজয়ী করে।
চোখ নামক কাগজটির জন্য এবার নিষ্প্রভ কিছু বাক্য উসকো খুসকো চুলের মতো একত্রিত করতে পারলেও কবিগুরু, নির্মলকুমারী মহলানবীশকে যে বলেছিলেন ‘সবকিছুর মধ্য থেকেও সবকিছুকে ছাড়িয়ে যাওয়া’ সেটা তিনি ভিন্ন অর্থে বললেও এ লিখাটি কিন্তু সবকিছুর মধ্যে থেকেও সবকিছুকে ছাড়িয়ে দাঁড়াতে পারছে না। তবু হোক, কিছু তো হলো। এবার পালা জীবনের তাৎপর্য নিয়ে। সাধারণত জীবনকে চিন্তা চর্চা তথা প্রয়োগের সম্মিলনীর সূচক হিসেবে ভাবতে হয়। জীবনের তাৎপর্য নিয়ে লেখক জিদ্দু কৃষ্ণমূর্তি আরো অতলের কথা বলেছেন এভাবে, ‘জীবনের তাৎপর্য কী? আমরা কেন বেঁচে আছি ও সংগ্রাম করছি? যদি আমাদের শিক্ষার লক্ষ্য হয় সনদ লাভ, কর্ম লাভ, দক্ষতা লাভ, অন্যের উপর প্রতিপ্রত্তি লাভ- তাহলেতো তোমাদের জীবন অতি সাধারণ ও অর্থহীন। তাঁর মতে, জীবনের রয়েছে বৃহত্তর তাৎপর্য। আমাদের শিক্ষার কীইবা মূল্য থাকলো যদি আমরা তা আবিষ্কার করতে না পারি? শিক্ষা যদি জীবন দৃষ্টিকে প্রসারিত করতে না পারে, তাহলে এ শিক্ষা নিতান্তই অর্থহীন’। সত্যিই, জীবনের তাৎপর্য ভাবার অর্থ হলো জীবনকে খড়কুটো না ভেবে পর্বতের মতো বড় করে ভাবা এবং নিজেকেও বড় হওয়ার প্রচেষ্টায় নিরত থাকা। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ নাট্যকার মুনির চৌধুরীর বোধ সম্পর্কে লিখেছিলেন ‘একজন মনুষের বড় বা অসাধারণ হওয়া যার উপর নির্ভর করে, তা হচ্ছে অসম্ভবের জন্য অন্তর্গত পিপাসা, কতোটা দুর্বার ও অপরাজেয় তার উপর। ভালো করে ভেবে দেখতে হয়, জীবনের কাছে তিনি কী চান? তার চাওয়া যদি হয় সাধারণ, কেবলই তেল নুন-লাকড়ি-ব্যাংক পুত্র পরিবার পরিবৃত্তে সুখী একটা জীবন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি সাধারণ। কিন্তু আকাঙক্ষা যদি হয় দশজনের চেয়ে আলাদা, অগতানুগতিক তখনই বুঝতে হবে তিনি সাধারণ থেকে ভিন্ন বড় আর প্রজ্জ্বলন্ত কিছুর জন্য জন্মেছেন। তিনি সহজ পথের প্রত্যাখ্যানকারী’।
তাহলে আমি কি লিখতে চাইছি জীবনের তাৎপর্য নিয়ে? আমি কি বিশ্বাস করি আমি নির্মোহ এবং আমার অন্তর্গত পিপাসা প্রবল? আমি কি জয় করতে পেরেছি রুচির দূর্ভিক্ষ আর মনের দরিদ্রতা? আমি কি অদম্য নৈপুণ্য আর আত্মজাগরনের চর্চা করি, আমি কি পরমত ও পরধর্ম সহিষ্ণু? আমার চেতনা জুড়ে সবকিছু স্বচ্ছ আর উজ্জ্বল? মোটেই নয়। তাহলে আমি কেন লিখতে বসেছি প্রবন্ধ/নিবন্ধ? কার জন্য লিখছি, মানুষের জন্য নিশ্চয়ই? তাহলে আমি কি মান্য করি লালনের সেই কথা, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবে’। আমি নিশ্চুপ..
লেনিন নাকি ম্যাক্সিম গোর্কিকে জিজ্ঞেসা করেছিলেন, কাগজগুলোতে ইদানিং খুব কবিতা লেখা হচ্ছে, তাই না? উত্তরে গোর্কি বলেছিলেন, ভালো গদ্যের চেয়ে, না ভালো না মন্দ পদ্য লেখা সহজ। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। নড়বড়ে সততা, দুর্বল ইচ্ছা ও স্থূল মানসিকতা নিয়ে প্রবন্ধ/নিবন্ধ লিখার অধিকার আমার নেই। আমি এটুকুতে থাকছি। হ্যাঁ, যদি নিজেকে সুন্দরের সুতোয় গাথতে পারি, যদি সত্যানুবর্তি হতে পারি, পারি যদি অশুভকে রুখতে, তাহলে পাটশাক ভাতে জীবন মেনে নিয়েও লিখবো।
গ.
লিখবো এজন্য যে, চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধে গিয়েও বহু সংকট মোকাবেলা করেও ক্যালেন্ডারের অপর পৃষ্ঠায় ছবি এঁকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণিত করার জন্য করেছিলেন চিত্র প্রদর্শনী। শত্রুর প্রতি প্রতিরোধ নিশানা ঠিক করে রাতভর দাঁড়িয়েছিলেন কাদাজলে। একসময় দেখলেন দাঁড়িয়ে আছেন কাদাজলে মিশে যাওয়া মলমূত্রের উপরে এবং তাঁর কান দিয়ে প্রায় প্রবেশ করছে মলমূত্রের পোকা, তবুও নিশানা থেকে সরে আসেননি। তাহলে আমি কেন থেমে যাবো বা সরে যাবো? বরং এ থেমে যাওয়া আত্মপ্রস্তুতি। তাই ঠিক করলাম, লিখবো অনাগত দিনে। হয়তো লিখাটা শুরু হবে এভাবে, ডায়রি হাতে মায়ের হাত ধরে শিশু সত্যজিত রায় গেলেন রবীন্দ্রনাথের কাছে, রবীন্দ্রনাথ সত্যজিতের ডায়রিতে লিখলেন অমর বাণী, দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা/দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু/ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দু’পা ফেলিয়া/ একটি ঘাসের শিসের উপর একটি শিশির বিন্ধু। কিংবা লিখবো The sophist political thought প্রসঙ্গে। গ্রীক রাষ্ট্র দর্শনে সফিস্টগণ কিভাবে জনমনে আলো জ্বেলেছিলেন। তাঁরা Philosophy, Theory, Thoughtful এ বিষয়গুলোকে কতো সতর্ক ও নির্ভীকতার সাথে নাড়াচাড়া করে সুসভ্য সমাজ গড়ে ছিলেন এবং গ্রীকে উচ্চমান সম্পন্ন সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিলো, হয়েছিলো বিবর্তন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যিনি অগ্নিশিখা জ্বেলেছিলেন, বিভিন্ন কাগজে পরা; প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আতেœাৎসর্গের কথা দিয়ে শুরু করবো হয়ত লেখা। যাঁর বিয়ের সম্বন্ধ এলে আলমারি থেকে কোষ্ঠী এনে কোষ্ঠীতে উল্লিখিত নিজ বৈধব্যও একুশ বছরে ফাড়ার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর বাবাকে বলেছিলেন, বিধবা হয়ে তো তোমার কাছেই ফিরে আসবো। ওটা বড় বিশ্রী। তার চেয়ে পড়াশোনা করবো। সেই একুশ বছরেই মানুষের মুক্তির জন্য আত্মাহুতির পর তার সাথে পাওয়া গিয়েছিল ছোট একটি বই, শ্রীকৃষ্ণের ছবির এবং চিরকুটে নিজ হাতে লিখা, I sacrifice myself in the name of God, Whom I have adward for years.

হয়তো লিখবো রুদ্রাক্ষের মালা গলায়, উঁচু চুলের খোঁপা, কপালে তিলক পড়ে ভাস্কর সত্তাকে মননে ধারণ করে, অত্যন্ত স্পর্ধায় নভেরা আহমেদ কিভাবে কাটিয়ে দেন একটি জীবন। অথবা নিয়ত অতল সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করেও এই সময়ের তরুণ ভাস্কর অখিল পাল দিনভর শিশুর মতো কাদাজল নিয়ে ভাস্কর্য গড়ে কিভাবে কাটিয়ে দেন দিনের পর দিন। কিংবা যশোরের কৃতি তরুণ সোহেল প্রাণন মারাত্মক ব্যধি বুকে ধারণ করেও, শুধু শিল্পকে ব্রত করে ‘বর্ণিকা’ নামক চিত্র পাঠশালা গড়ে শিশুদের বোধের অতলে আঁকেন স্বপ্নের ক্যানভাস। অথবা কৃষ্ণ শীল ক্ষৌরকর্মের ফাঁকে একটি নির্দিষ্ট সময় দৈনিক কাগজের সাহিত্য পাতায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকার ঘটনা অথবা যাত্রাশিল্পের দরদি প্রতিভা সত্তোরোর্ধ জাহেদ আলী মংলা কাজের প্রকৃত স্বীকৃতি না পেয়েও তীব্র যন্ত্রণা বুকে নিয়ে এখনো কিভাবে হাসেন অথবা আব্দুস সাত্তার বয়াতী ভগ্ন শরীর নিয়েও কি দুর্বার গতিতে এখনো সঙ্গীদের নিয়ে ছুটে যান পালাগানের মঞ্চে। অথবা ক্যান্সার আক্রান্ত কবি কমল মমিন এখনো কি নিখুঁত ভঙ্গিমায় বলেন, আমাকেও মনে রেখো।
প্রবন্ধ/নিবন্ধ লিখবো, লিখবোই একদিন। জার্মান কবি, ওপন্যাসিক, নাট্যকার ও ভাস্কর গুন্টার গ্রাস সারাজীবন যেমন ‘গভীর অভিনিবেশ’ সহকারে কোনো না কোনো কাজ করতেন, হোক ভাস্কর্য, আঁকাআঁকি কিংবা কবিতা লেখা। তেমনিভাবে আত্ম প্রস্তুতি নিয়ে ‘গভীর অভিনিবেশ’ সহকারে যেদিন লিখতে পারবো, লিখবোই সেদিন।
যদি থেমে যায় সময়, থেমে যায় যদি জীবন; অন্তত অশ্রুজলে তো লিখতে পারবো!
লেখক: সংগঠক, পাঠাগারব্রতী E-mail: ,jalshiri_birisiri@yahoo.com

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।