দুর্গাপুরে পাথর-বালু-কয়লা বহনকারী ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার জন্য চিঠি

সৌমিন খেলন, দুর্গাপুর থেকে ফিরে : সড়কে অতিরিক্ত চাপ এবং যানজট থেকে জনদুর্ভোগ কমাতে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে পাথর-বালু ও কয়লা বহনকারী ট্রাক চলাচলের সময় নিয়ে আসছে নিষেধাজ্ঞা।

এ নিয়ে ইতোমধ্যে নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মানু মজুমদার জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন। রোববার বিকেলে সংসদ সদস্য মানু মজুমদার বাংলার নেত্র-এর কাছে বিষয়টি তোলে ধরেন।

তিনি জানান,নেত্রকোণার শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কে বালু-পাথর ও কয়লা বহনকারী হাজার হাজার ট্রাক চলাচল করে প্রতিদিন! মানা হয়না কোনো নিয়মকানুন অথচ এই ওভারলোড যানবাহনের জন্য সড়ক ভেঙে অর্থনৈতিকভাবে সরকার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

অপরদিকে এলাকার মানুষ বছরের পর বছর ভাঙা সড়ক ও যানজটে পড়ে পোহাচ্ছেন অসহনীয় দুর্ভোগ! ট্রাক চলাচলে ভাঙা সড়কে বিচ্ছিন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াতের কারণে দুর্গাপুর থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

এতে করে উন্নয়নের দিক থেকেও পিছিয়ে পড়ছে এ অঞ্চলের মানুষ। একটি এলাকা যখন পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত হয়ে তখন আল্টিমেট এলাকার মানুষই সবার আগে উপকৃত হন।অথচ হাতে গোনা আজ কয়েকজন লাভবান হলেও বৃহৎ অংশটা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অতএব এভাবে চলতে পারেনা। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কটি ৩১৬ কোটি টাকা ঢেলে পুন:নিমার্ণ করছে সরকার, তা কিছুতেই ধ্বংস হতে দেয়া যাবেনা।

ট্রাক চলাচলে সময়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জানতে চাইলে এমপি জানান, দিনগত রাত ৮ টা থেকে পরদিন ভোর ৬ টা পর্যন্ত প্রতিদিন বালু-পাথর অথবা কয়লা বহনকারী ট্রাক চলাচল করতে হবে। সেক্ষত্রে এটাও মনে রাখতে হবে সকড় দিয়ে কখনো ভিজা মালামাল নিয়ে চলাচল করতে পারবেনা কোনো চালক।

সময়অসময় দিনভর এই ট্রাক চলাচলের জন্য সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। এতে করে অন্যান্যদের মতো প্রতিদিন স্কুল-কলেজ আর কর্মজীবীরাও দুর্ভোগে পড়েন। সময়মত কোথাও পৌঁছানো কিংবা কোনো কাজ সম্পাদন করা যায়না। কেউ অসুস্থ হলে এ্যাম্বুলেন্স দিয়েও এ সড়ক দিয়ে বের হওয়ার আগে ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের ফাঁদে পড়ে পথিমধ্যে একটি মানুষের জীবনাবসান হয়ে যায়।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, সংসদ সদস্য চিঠি দেয়ার আগেই জেলা প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হয়েছে।

শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর বা দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কে কোনো ট্রাক যেন ভিজা বালু-পাথর অথবা কয়লা নিয়ে চলাচল করতে না পারে সেইজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরই সাথে ওভারলোড করে চলাচল ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

তবে সময় বেধে যানবাহন চলাচলের নিয়ম বেঁধে দেয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু করার নেই। যোগ করেন জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম।

জনস্বার্থে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার। তিনি জানান, দুর্গাাপুরে ট্রাক চলাচলের সময় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে হাই কোর্ট, সুপ্রিমকোর্টের পথে হাটবেন তিনি। ইতোমধ্যে সেই ব্যবস্থাও পক্রিয়াধীন।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।