পূর্বধলায় সাংসদের বিরুদ্ধে আ.লীগ প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ প্রতিনিধি: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেত্রকোণার পূর্বধলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম সূজনের স্থানীয় সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের (বেলাল বীর প্রতীক) বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, বিদ্রোহী প্রার্থীকে প্রকাশে সমর্থনসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বুধবার দুপুরের দিকে শ্যামগঞ্জ বাজারে জাহিদুল ইসলাম সূজনের নির্বাচনী কার্যালয়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর থেকেই পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি তাঁর সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাংসদের অনুগত উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মাছুদ আলম তালুকদারের পক্ষে ভোট চাইছেন। জাহিদুলের অভিযোগ, সাংসদ প্রায় প্রতি দিনই বিদ্রোহী প্রার্থীও পক্ষে কোন না কোন সভা সমাবেশে যোগদান করে জাহিদুলকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কুরুচি পূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে প্রভাব খাটিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট না দিতে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষদের ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। সাংসদের নির্দেশে তাঁর সমর্থকরা মোটর সাইকেল বহর নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করা দলীয় নেতাকর্মীদের অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকি, নৌকার ব্যানার, পোস্টার ছিড়ে ফেলা, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর করে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাংসদের পেটোয়া বাহিনী সপ্তাহ খানেক ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে নৌকা প্রতীকের অন্তত আটজন সমর্থকদের মারধোর করে আহত করছে। আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা ব্যবসায়ী প্রদীপ কুমার কর ও সবজি ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জাহিদুল ইসলাম অভিযোগে আরো বলেন, সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁর নিজ গ্রামের বাড়ি কাজলাতে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও থানা পুলিশের কিছু কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মাছুদ আলমের আনারসের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সাংসদ বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে পরাজিত করেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিল্লাল উদ্দিন বলেন, ‘সাংসদ প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বা থানার কোন পুলিশকে উনার বাড়িতে নিয়ে পরামর্শ করার অভিযোগ ভিত্তি হীন ও বানোয়াট। আমাদের কাছে এ রকম কোন তথ্য নেই।’
গোহালাকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান হাসনাত জামান খোকনের সভাপতিত্বে জাহিদুল ইসলাম ছাড়াও বক্তব্য দেন, ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন আকন্দ, পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও হোগলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি চন্দন কুমার কুন্ড, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, আজহারুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন, আইয়ুব আলী, শহিদুল ইসলাম সরকার প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক মুঠোফোনে জানান,নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হবে। স্বতস্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে দলের তো আপত্তি নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় পূর্বধলায় আওয়ামীলীগ আগের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।