
বিশেষ প্রতিনিধি: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান বলেন, ‘আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেমন বেদনার তেমন গর্বের। তিনি মোহনগঞ্জের তিন শহিদদের স্মরণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আলোচনার এক পর্যায়ে নিজ দপ্তর নিয়ে তিনি বলেন, “হাওরাঞ্চলের মোহনগঞ্জে মৎস্য গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। তিনি আরো বলেন, শুধু মুখে বড় বড় কথা বললে হবে না। অন্তরে তা ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করতে চাই।’ শনিবার সন্ধ্যায় নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী তিন ছাত্র ফজলুর রহমান খান, দবির উদ্দিন আহম্মেদ, আনোয়ারুল আলম খান চৌধুরীর স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঢাকাস্ত মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমিতি।
এ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত একই দল। একজন সাফারি পড়ে, আরেকজন পায়জামা-টুপি পড়ে। এদের লক্ষ্য ও উদ্ধেশ্যে একই। এরা মুক্তিযুদ্ধকে কখনো মেনেনিতে পারেনি। ১৯৭৫ সালে এরা মুক্তিযুদ্ধকে মুছে দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। আমরা এখন যারা স্বাধীনতার কথা বলি, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে বড় বড় বুলি আওড়াই সে-দিন আমরা কোথায় ছিলাম? তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মনে রাখি, না থাকলে নিশ্চুপ থাকি। শেখ হাসিনা না থাকলে এই যুদ্ধাপরাধিদের কখনো বিচার করা সম্ভব হতো না। এদেশে শান্তি, ঐক্য, প্রগতি রাখতে হলে বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করতে হবে। এদের সঙ্গে কখনো আত্মীয়তা করা যাবে না। আমাদের অনেকেরই ভাই, বোন, মেয়ের জামাই বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িত। তাঁদেরকে সচেতনভাবে এড়িতে যেতে হবে। এই ইতিহাসবিদ বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, বিজয়ের কথা বলি কিন্তু কখনো গণহত্যার কথা বলি না। গণহত্যার কথা পাঠ্যপুস্তকেও লিখিনি। এই চেতনাও জাগ্রত করিনি। এটা উচিত হয়নি।’
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাযালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী মাহমুদ আকন্দ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান, নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাংসদ অসীম কুমার উকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কর্ম কমিশনের সদস্য উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, মোহনগঞ্জ পৌরসভার মেয়র লতিফুর রহমান, শহিদ ফজলুর রহমান খানের ভাইয়ের মেয়ে মুনিরা নাসরিন, দবির উদ্দিন আহম্মেদের ছোট বোন মাহবুবা হোসেন, আনোয়ারুল আলম খান চৌধুরীর ছোট বোন আকিকুন্নেছা খানম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পযায়ক্রমে সব বুদ্ধিজীবী শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ফলক নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধাদের নামে পথের নামকরণসহ চিহ্নিত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ করা হবে।
বক্তব্যে অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘খালেদা জিয়া জামাতকে নিয়ে ক্ষমতায় এসে সচেতনভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধূলিসাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে আর এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাতে চায় না এ দেশের জনগণ।’