
বিশেষ প্রতিনিধি: আজ বুধবার নেত্রকোণায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৩তম বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর একজন বরেণ্য লেখক, কবি, সাহিত্যিককে এ পুরস্কার দেয় নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ। বরাবরের মতো এবারো নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ দুইদিনব্যাপি এই উৎসবের আয়োজন করেছে।
প্রতিথযশা সাহিত্য সমালোচক ও প্রাবন্ধিক রফিক উল্লাহ খান ও কবি মারুফুল ইসলামকে এ বছর খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হবে।
আয়োজকরা জানান, বুধবার ফালগুনের প্রথম সকাল শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় বকুলতলা প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা, সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন ও ভাষা শহীদসহ সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে উৎসবের উদ্বোধন করবেন কবি মাসুম পারভেজ। এরপর জেলা উদীচী’র পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হবে ‘বসন্ত বন্দনা।
সকাল ১০টায় বের করা হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। এছাড়া দিনের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বংশীবাদক মুখলেছুর রহমানের একক পরিবেশনায় বাঁশির সুর, ঝুটন ঘোষের তবলার লহরি, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া পাঠ, গল্প পাঠ, সাহিত্য আড্ডা, নতুন প্রকাশিত বইয়ের পাঠ উন্মোচন।
অনুষ্টানের দ্বিতীয় পর্বে বেলা আড়াইটায় আরাফাত সিদ্দিকী সোহাগ এর পরিচালনায় নতুন প্রকাশিত বইয়ের পাঠ উন্মোচন,তিনটায় সঞ্জয় সরকারের পরিচালনায় স্বরচিত কবিতা ও ছড়া পাঠ, বিকেল চারটায় আবৃত্তি শিল্পী বারীণ ঘোষ ও দিলশাদ সিদ্দিকা স্বাতী’র দ্বৈত কবিতা আবৃত্তি।
সাড়ে চারটায় লোক গবেষক সুমন কুমার দাশ এর সভাপতিত্বে প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা, নব্বই পরবর্তী বাংলা কবিতা এবং বাংলা কথাসাহিত্যের স্বর ও স্বতন্ত্র। আলোচনা করবেন, প্রাবন্ধিক মৃদুল মাহবুব, আলোচক কবি রানা রাগ,কবি স্নিগ্ধা বাউল, কথাশিল্পী রুমা মোদক, কবি মামুন খান,কবি গণি আদম,কথাশিল্পি স্বকৃত নোমান,কথাশিল্পী শাহরিয়ার বিপ্লব, কথাশিল্পী মোজাফফর হোসেন,কবি মাসুম মোকারম, কবি আহমেদ স্বপন মাহমুদ। সন্ধ্যে ছয়টায় কণ্ঠ শিল্পী পিয়া বৈশ্য পরিবেশনায় জালাল ও লালন বন্দনা।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ এমরান জানান, এবার ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরের বকুলতলায় এই অনুষ্ঠান হবে। ফাল্গুনের প্রথম দিন সকাল নয়টার দিকে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন এবং ভাষা শহীদসহ সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে উৎসব উদ্বোধন করা হবে। এরপর জেলা উদীচী পরিচালিত হায়দার-শেলী স্মৃতি সঙ্গীত বিদ্যানিকেতনের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হবে ‘বসন্ত বন্দনা। সকাল ১০টায় বের করা হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। এছাড়া দিনের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, প্রখ্যাত বংশীবাদক মো. মুখলেছুর রহমানের একক বাঁশির সুর, সঞ্জিত কুমার ঘোষের তবলার লহরি, আশিস সরকারের পরিচালনায় স্বরচিত কবিতা, ছড়া ও গল্প পাঠ, আরাফাত সিদ্দিকীর পরিচালনায় নতুন প্রকাশিত বইয়ের পাঠ উন্মোচন, আলোচনা। দ্বিতীয় পর্বে বিকেল তিটার দিকে সঞ্জয় সরকারের পরিচালনায় আবারো স্বরচিত কবিতা ও ছড়া পাঠ। এরপর বারীণ ষোষ ও দিলশাদ সিদ্দিকার কণ্ঠে অসীমের ধ্বনি দ্বৈত কবিতা আবৃত্তি। বিকেল সাড়ে চারটায় নব্বেই পরবর্তী বাংলা কবিতা এবং বাংলা কথাসাহিত্যের স্বর ও স্বাতন্ত্র বিষয়ে প্রবন্ধ পাঠ করবেন মৃদুল মাহবুব। আলোচনা করবেন কবি রানা নাগ, কবি স্নিগ্ধা বাউল, কথাশিল্পী রুমা মোদক, কবি মামুন খান, কবি গণি আদম, কথাশিল্পী স্বকৃত নোমান, কথাশিল্পী শাহরিয়ার বিপ্লব, কথাশিল্পী মোজাফফর হোসেন, কবি মাসুম মোকারম ও কবি আহমেদ স্বপন মাহমুদ। এতে সভাপতিত্ব করবেন লোকগবেষক সুমন কুমার দাস। সন্ধ্যা ছয়টায় জালাল ও লালন বন্ধনা করবেন শিল্পী পিয়া বৈশ্য। রাত সাতটায় খালেকদাদ ছৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান। এতে প্রাবন্ধিক রফিকুল্লাহ খানের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করবেন সেরোজ মোস্তফা ও কবি মারুফুল ইসলামের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করবেন আবদুর রাজ্জাক। আলোচনা করবেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট লোকগবেষক ও প্রাবন্ধিক শামসুজ্জামান খান, কবি নির্মলেন্দু গুণ, প্রাবন্ধিক ফরিদ কবির। রাত নয়টায় মুন্নি কাদেরের একক কণ্ঠে নজরুল গীতি এর পর শিল্পী গোলাম মৌলার পরিবেশনায় বাউল গান।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন সকাল ১০ টা থেকে কবিতা পাঠের আসর, গান, সাহিত্য আড্ডা, নৃত্য শেষে সন্ধ্যা ছয়টায় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সাহিত্য সমাজের উপদেষ্টা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান। বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী প্রমুখ। আলোচনা শেষে শিকড় উন্নয়ন কর্মসূচির পরিবেশনায় মাটির গান, সৎসঙ্গ থ্রিয়েটারের পরিবেশনায় নাটক ও জেলা উদীচীর পরিবেশনায় গণজাগরণের গান।
নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজের সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবে এর আগে ২৪ জন কবি-সাহিত্যিককে খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হয়েছে। পুরস্কৃতজনরা হলেন, যতীন সরকার, আনিসুজ্জামান, কবীর চৌধুরী, হুমায়ুন আহমেদ, নির্মলেন্দু গুণ, রাহাত খান, হেলাল হাফিজ, রফিক আজাদ, বুলবন ওসমান, মহাদেব সাহা, জাফর ইকবাল, নাসরিন জাহান, আবু হাসান শাহরিয়ার, সেলিনা হোসেন, সেলিম আল দীন, আলতাফ হোসাইন, আনিসুল হক, জাকির তালুকদার, মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ নুরুল হক, কবি আসাদ চৌধুরীকে, সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, কবি খালেদ মতিন (মরণোত্তর)। নেত্রকোণা ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কবি সাহিত্যকরা প্রতিবছর এই উৎসবে যোগ দেন।