দুর্গাপুরে চা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলা বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের গারো পাহাড় অঞ্চলে চা চাষে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এ এলাকার মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে চা বাগান করার উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এ লক্ষ্যে গারো হিলস্ টি কোম্পানি নামের একটি বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে দুর্গাপুর উপজেলার গারো পাহাড় সংলগ্ন ২৭ জন আগ্রহী চা চাষীর মধ্যে ১০ হাজার চারা রোপণের জন্য বিতরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের একটি বিশেষজ্ঞ দল নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জমির মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে উপজেলার পাহাড়ি এলাকার টিলা ও জমি গুলোকে চা চাষের উপযোগী ঘোষণা করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক জমি, অর্থায়ন, উদ্যোক্তা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। বারোমারি এলাকার গৌরব কুবি জানান,গোপালপুর, বারমারি, দাহাপাড়া, ভবানীপুর এলাকায় প্রায় ১৭টি প্রদর্শনী বাগান করা হচ্ছে। এটা পর্যাক্রমে আরও বাড়ানো হবে। জানা যায়, গারো পাহাড় অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি ফসল ও শস্য উৎপাদিত হলেও বিভিন্ন সময়ে বন্য হাতির আক্রমণে আবাদিকৃত ক্ষেত বারবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং প্রান্তিক চাষীদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ত ভেঙে যায়। তাই এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় ৬ বছর পর সম্প্রতি নিজেদের উদ্যোগে চাষ শুরু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। আর উৎপাদিত চা নেত্রকোনা জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি অত্র এলাকায় পর্যটন কেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। চা চাষী বেষ্টিং ¤্রং জানান, চা চাষ আমাদের গারো পাহাড়ে আরও অনেক বছর আগ থেকেই করা যেতো। গত বৈশাখ মাসে গারো হিলস টি কোম্পানি থেকে আমাদের সিলেট ও চট্রগামের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখলাম চা চাষ করে সে অঞ্চল খুব উন্নত হয়েছে। আর আমরা যে ফসলগুলো আবাদ করি তা হাতি খেয়ে ফেলে। এতে আমাদের অনেক লোকসান হয়। শুনেছি চা গাছ হাতি খায় না। তাই আমরা এবার থেকে অন্যান্য চাষের পরিবর্তে চা চাষ করবো।

পরিবেশবিদ বারসিক‘র আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. ওহিদুর রহমার জানান, এ জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চা চাষের জন্য মাটির গুণাগুণ, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য পরিবেশগত অবস্থা চা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। যে পাহাড় গুলোতে রেডোরেন্ড্রন নামক এই গাছটি জন্মাবে, সে মাটিতে চা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা থাকে। কাজেই এ অঞ্চলের মাটিতে উন্নত মানের চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, এক সময় চা চাষ সিলেটেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০০০ সালে সালে পঞ্চগড়ে ও ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে চা চাষ শুরু হয়। দুর্গাপুর উপজেলার পাহাড় গুলোতে চা বাগান গড়ে উঠলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পর্যটনেও আকৃষ্ট হবে। চা চাষে যে কানো সহযোগিতা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে। গারো পাহাড়ে চা চাষাবাদের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ নিয়ে সরকারের উর্দ্ধতন মহলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

শর্টলিংকঃ
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।