
বিশেষ প্রতিনিধি: নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ছোটকাইলাটি গ্রামের বাঘারকোণা খালের উপর ৩ বছর আগে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের পর এর দু‘পাশে কোন সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সেতুটি এলাকাবাসির কোনো কাজেই আসছে না। এই সেতুটির দু‘পাশের সংযোগ সড়কের অভাবে কাইলাটি ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াত,ধান,চালসহ অন্যান্য ফসল,কৃষিপণ্য,সেচযন্ত্র,কৃষি যন্ত্রপাতি পারিবহনে কৃষকদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে এ এলাকার ফসল উৎপাদন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এ ইউনিয়নের অর্থনৈতিক অবস্থাও ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এলাকাবাসি জানায়, এ এলাকার দূর্ভোগ দূর্দশা বিবেচনা করে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে গত ২০১৫-২০১৬ ইং অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর প্রকল্প-৩ এর আওতায় ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এ সেতটিু নির্মাণ করেন। কিন্তু গত ৩ বছরেও সেতুটির দু‘পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সেতুটি এখন এলাকাবাসির গলার কাঁটায় পরিণত হয়ে।
এ ব্যাপারে ছোটকাইলাটি গ্রামের সোনা মিয়া, শাহীন মিয়া, আলেফ আলী ও সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ সেতুটির দু‘পাশে সংযোগ সড়কের অভাবে জমি থেকে ধান কেটে ও সরিষা তুলে বাড়ি আনতে আমাদেও খুবই কষ্ট হয়। বড় বড় বোঝা মাথায় নিয়ে খালের গড়ান ওঠা নামা করতে হয়। এ ছাড়া হাটু ও কোমর পানি ভেঙ্গে ফসল বাড়িতে নিতে হয়। জমিতে কৃষি ও সেচ যন্ত্র নিতে কষ্ট হয়। যাতায়াতে চরম কষ্ট হয়। এ সংযোগ সড়কের অভাবে এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে না। সড়ক খারাপের কারণে দূরের আতœীয়-স্বজন এ গ্রামে আসতে চায় না। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেও যাতায়াতে কষ্ট হয়। ফলে এ গ্রামে শিক্ষার হার তুলনা মূলক ভাবে কম। ছেলে মেয়েদের বিয়ে সাদি দিতেও সমস্যা হয়। এ ছাড়া হাসপাতালে প্রসূতী রোগীদের নিয়ে যেতে খুবই কষ্ট হয়। এ ছাড়া এ গ্রামের অস্টম শ্রেণীর মোরসালিন, নবম শ্রেণীর আকাশ, ১০ম শ্রেণীর হানিফ আলী, পেরাগাতির কাওসার, শাকিল, ইয়াসিন, ওরাঙ্গাবাদের রাসেল, একাদশ শ্রেণীর, টুম্পা ও হাসনা জানায়, এ সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রতিদিন তাদেও হাটু পানি ভেঙ্গে ও পোশাক ভিজিয়ে স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে হয়। ভেজা কাপড়ে সারা দিণ থাকার কারণে তারা প্রায়ই নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পরে। ফলে পরীক্ষায় তাদের রেজাল্টও খারাপ হয়। এ সমস্যায় অনেকে লেখা-পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ইতিমধ্যেই তাদের অনেক সাথী লেখা-পড়া ছেড়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কাইলাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটির দু‘পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত আছে। প্রজেক্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।