
বিশেষ প্রতিনিধি: মহান বিজয়ের মাসে নেত্রকোণা জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় জেলা পুলিশ লাইন্সে একান্ন জন পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) (সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) এসএম আশরাফুল আলম এর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ্জাহান মিয়া, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ইউনিট কমান্ড মো. নুরুল আমিন, ডেপুটি কমান্ড আব্দুল মতিনসহ অন্যরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) এস.এম আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহ্জাহান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল (সদর সার্কেল), নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বোরহান উদ্দিন খান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নাজমুল হাসানসহ প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক গণ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাসহ আমন্ত্রিত সকল অতিথিদের পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী ফুল দিয়ে বরণ করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান শেষে তাঁদের হাতে সংবর্ধনা ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তোলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের বিভীষিকাময় দিনগুলির কথা তোলে ধরে স্মৃতিচারণ করেছেন পুলিশ বাহিনী গর্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
অনুষ্ঠানে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান মিয়া তাঁর বক্তব্যে সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতিচারণ করে জানান, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী একযোগে আক্রমণ করেছিল ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজারবাগ আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ উদ্যোগে ইংরেজিতে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের বার্তাটি দেশের তৎকালীন সব থানায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি বেতার বার্তায় বলেন, ‘বেইজ ফর অল স্টেশন্স অব ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ, কিপ লিসেন অ্যান্ড ওয়াচ, উই আর অলরেডি অ্যাটাকড বাই পাক আর্মি। ট্রাই টু সেভ ইয়োরসেলভস, ওভার।’ ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে সারা দেশে এই বার্তা ছড়িয়ে দেন। এজন্য পরদিন ২৬ মার্চ ভোর পাঁচটার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগের ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে অন্যান্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন পুলিশের এই সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মিয়া। তিনি উপপরিদর্শক (সাব ইন্সপেক্টর) হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অবসরে যান। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বাড্ডা গ্রামে। তিনি এসময় নেত্রকোণায় জেলা পুলিশের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণেরও আহ্বান জানান।