
আল-মামুন, সাভার থেকে: সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাঙ্গালিনী সুফিয়ার অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। ব্রেণের ষ্ট্রোকের পর তার হৃদয়েও একটি ষ্ট্রোক ধরা পড়েছে। পাশাপাশি ব্লাড প্রেশার ও কিডনীতেও সমস্যা পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় তাকে ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মাথা ব্যাথা ও ঘন ঘন বমি করার কারণে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার মাথায় সিটিস্ক্যান করে ছোট একটি ব্রেণের ষ্টোক ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজিষ্ট প্রফেসর মঈন উদ্দিন আহমেদের ত্বত্তাবধানে করোনারি কেয়ার ইউনিটের পিসিসিইউ-২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অসুস্থ্যতার বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: এনামুর রহমান শনিবার সকালে এবং দুপুরে তাকে দেখতে যান এবং তার চিকিৎসার বিষয়ে যাবতীয় খোজ খবর নিয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার দায়িত্ব গ্রহন করে যাবতীয় চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ দেন। সিসিউতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, পরিক্ষা নিরীক্ষায় কাঙ্গালিনি সুফিয়ার ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, হার্ট এ্যাটাকের কারনে মাইল ইঞ্জুরি, উচ্চ রক্তচাপ এবং প্রেসার বেশী হওয়ায় তাকে শুক্রবার সিসিইউতে আনা হয়েছে। বর্তমানে তার মাথা ব্যথা কমে গেছে। দুই থেকে পাঁচ দিন এখানে চিকিৎসা নিলে তার সমস্যাগুলো আরও কমে আসবে বলে জানান তিনি। কাঙ্গালিনি সুফিয়ার নাতি গিটার বাদক সোহান যাযাবর বলেন, আমার নানু অসুস্থ্য হওয়ার পর বিষয়টি শিল্পী মহলের সবাইকে ফোন করে জানানো হয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত শিল্পী মহলের পক্ষ থেকে কেউ তাকে দেখতে না আসায় আসাহত হয়েছেন কাঙ্গালীনি সুফিয়া। উল্লেখ্য, বাউল গানের শিল্পী কাঙ্গালিনী সুফিয়া মাত্র ১৪ বছর বয়সে গ্রাম্য একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়ে শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই সময়ই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর ডি.জি. মুস্তফা মনোয়ার তার উপাধি দেন ‘কাঙ্গালিনী’। সেই থেকে তিনি কাঙ্গালিনী সুফিয়া নামে পরিচিতি পান। সঙ্গীতে এযাবৎ তিনি প্রায় ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। গান রচনা করেছেন প্রায় ৫০০টি। তার জনপ্রিয় গানের তালিকায় আছে- ‘পরাণের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারনে’, ‘কোন বা পথে নিতাই গঞ্জে যাই’, ‘নারীর কাছে কেউ যায় না’ প্রভৃতি।