
মদন প্রতিনিধি: স্বামীর বরণ পোষণের দাবীতে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে ১১ দিন ধরে অনশন করছেন নেত্রকোণার মদন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পরশখিলা গ্রামের আলী আকবরের প্রথম স্ত্রী কমলা আক্তার।
জানা যায়, পরশখিলা গ্রামের শহর আলীর ছেলে আলী আকবর ২০ বছর আগে একই উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শক্কুর আলীর মেয়ে কমলাকে বিয়ে করেন। দীর্ঘদিন ঘর-সংসার করার পর পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে স্ত্রীকে ফেলে রেখে বড় ভাইয়ের ছেলে ভাতিজা হাফিজুরের নিকট ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে কর্মের উদ্দেশ্যে ঢাকায় চলে যান। সেখানে আরেকটি বিয়ে করে বাড়িতে না আসায় নিরুপায় হয়ে প্রথম স্ত্রী স্বামীর অধিকার আদায় ও বরণ পোষণের জন্য বিক্রি করে দেয়া স্বামীর ভিটার পাশে ১১ দিন ধরে না খেয়ে অনশন করছেন প্রথম স্ত্রী কমলা আক্তার। বাড়ির লোকজনসহ আশে পাশের লোকজন এ ধরণের অনশণে আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে অনেক অনুনয়-বিননয় করেও অনশণ থেকে সরাতে পারছে না। বিষয়টি এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে রোববার সরেজমিনে গেলে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। কেন এমন অনশন তাকে প্রশ্ন করলে সে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন স্বামী না আসলে আমি এখান থেকে যাব না। আমার বরণ পোষণসহ এ ভিটাতে একটি ঘর করে দিতে হবে। আমি সেখানেই থাকব। আমার কাছে কেউ আসবেন না। আমি এখানে মরব। তবে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দেননি।
পাশের বাড়ির পরশখিলা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন জানান, তার স্বামী আলী আকবর ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে ঢাকা চলে গেলে কমলা আক্তার ৭/৮ মাস ধরে প্রায়েই এই স্থানে এসে রাত-দিন কাটায়। ১১ দিন ধরে সে না খেয়ে খোলা আকাশের নিচে যেভাবে বসবাস করছে তাতে যে কোনো সময় অঘটন ঘটতে পারে। এতে আমিসহ এলাকার লোকজন আতংকে আছে। বিষয়টি কমলার অভিভাবক হারুনসহ মদন থানার ওসিকে অবগত করা হয়েছে। কেউ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশুহস্থক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।
কমলার অভিভাবক ভগ্নীপতি হারুন জানান,তাকে স্বামী রেখে যাওয়ার পর থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙ্ েপড়েছে। কখন সে কি করে কাহারো কথা সে মানছে না। স্বামী বরণ পোষণ করলেই হয়তো তার এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।
মদন থানার ওসি মোঃ রমিজুল হক জানান, রোববার পরশখিলা গ্রামের কয়েকজন লোক এ ঘটনা সম্পর্কে আমাকে অবগত করে। বিষয়টি ইউএনও স্যারের সাথে আলোচনা করে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাহায্য নেয়ার জন্য পরামর্শ দেই। আমার কাছে নারী নির্যাতন সর্ম্পকে কোনো অভিযোগ দিলে মামলা নিব।
স্বামী আলী আকবরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।