
কেন্দুয়া প্রতিনিধি: ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রাণ গেল মাহিন মিয়া (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের। গত রবিবার বিকালে পৌর শহরের আদমপুর এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি সড়কের পাশে ফায়ার সার্ভিস অফিসের বাউন্ডারীর সাথে হেলান দিয়ে রাখা লোহার গেইট চাপা পড়ে মারা যায় মাহিন।
নিহত মাহিন উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের রায়পুর (পূর্বপাড়া) গ্রামের গাজীবুর রহমানের ছেলে এবং পৌর শহরের আদমপুর খান এন্ড পন্ডিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
নিহত মাহিনের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, রবিবার বিকালে স্কুলছাত্র মাহিন মিয়া গ্রামের অন্য শিশুদের সাথে স্থানীয় হেলিপ্যাড মাঠে পশুরহাট দেখতে যায়। পরেবাড়ি ফেরার পথে তাকে গরু তাড়া করে। এ সময় সে আশ্রয় নিতে ছুটে যায় স্থানীয়ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাছে। সেখানে সড়কের পাশে ফেলে রাখা ফায়ার সার্ভিস অফিসের নির্মাণাধীন লোহারগেইটের সঙ্গেধাক্কা লাগলে গেইটটি মাহিনের উপর পরে যায়। এতে গেইটের চাপায় মাহিনের মাথায় আঘাত লেগে তার মস্তক বেরিয়ে পরে। বিষয়টি জানতে পেরে ফায়ার সার্ভিস অফিসের লোকজনদ্রুত মাহিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আলী মোহাম্মদ হোসাইন তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কেন্দুয়া থানার পুলিশ এবং ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য স্কুলছাত্র মাহিনের পরিবার ও এলাকার সচেতন মহল ফায়ার সার্ভিস অফিসের কর্মকর্তাদেরকেই দায়ী করছেন। তারা বলছেন, নির্মাণাধীন লোহার গেইটের অংশগুলো যদি সড়কের পাশে না রেখে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বাউন্ডারীর ভিতরে রাখতেন- তাহলে মাহিনকে গেইট চাপায় প্রাণ দিতে হতো না। শুধু তাই নয়, এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ময়মনসিংহ অঞ্চলের সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমানকেও। কারণ তিনিই ময়মনসিংহ অঞ্চলের সকল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কার্যক্রম তদারকি করেন। কিন্তু সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান নিজেই তার দায়িত্বে চরম অবহেলা ও গাফিলতি করে আসছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ মাহমুদ আলম জানান, দুইদিন আগেইগেইটটিরকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু নেত্রকোনার ঠিকাদার আবু তাহেরের গাফিলতির কারণেই কাজ সম্পন্ন হয়নি। যে কারণে এদুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী জানান, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে শিশুটির লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে।